ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

ক্যানোলা লাগাতে দুইশ টাকা নেন ওয়ার্ডবয়!

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | আপডেট: শনিবার, আগস্ট ১৯, ২০২৩

ক্যানোলা লাগাতে দুইশ টাকা নেন ওয়ার্ডবয়!
ছয় বছর বয়সী জান্নাত এক সপ্তাহ ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইমার্জেন্সি কক্ষে নিয়ে গেলে ডাক্তার টাইফয়েড জ্বর হয়েছে জানিয়ে ভর্তি করে দেন তাকে।

ব্যবস্থাপত্রে ডাক্তার টাইফয়েডের ইনজেকশন লিখেছেন। কিন্তু জান্নাতের বয়স কম হওয়ার কারণে ক্যানোলার সাহায্যে শরীরে ইনজেকশন দিতে হবে। এ সুযোগে জান্নাতের হাতে একটি ক্যানোলা লাগিয়ে ২০০ টাকা দাবি করেন হাসপাতালের আউটসোর্সিং হিসেবে নিয়োজিত ওয়ার্ডবয় গাজী।

পরে ১০০ টাকা হাতে দিলে টাকা ছুড়ে ফেলে দিয়ে উল্টো পাগল-ছাগল বলে অপমান অপদস্থ করেন বলে যুগান্তরকে জানিয়েছেন জান্নাতের বাবা মো. তারেক।

একইভাবে হাজিরহাট ইউনিয়ন থেকে চিকিৎসা নিতে আসা ডেঙ্গু আক্রান্ত লাইজু আক্তারের হাতে ক্যানোলা লাগিয়ে ১০০ টাকা ও চরমার্টিন ইউনিয়নের রাসেলের ছেলে শিশু নাহিদের হাতে ক্যানোলা লাগিয়ে ১৫০ টাকা হাতিয়ে নেন ওয়ার্ডবয় গাজী।

শুক্রবার রাত ৯টার দিকে সরেজমিন গিয়ে হাসপাতালের একাধিক রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিনামূল্যে যে সব সেবা রোগীদের পাওয়ার কথা, সেগুলো টাকা ছাড়া মিলছে না। এর মধ্যে রোগীর শরীরে ক্যানোলা ও স্যালাইন লাগিয়ে সর্বনিম্ন ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয় ওয়ার্ডবয় গাজীকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, গাজী এ হাসপাতালে দীর্ঘদিন পর্যন্ত থাকার কারণে রোগীদের সঙ্গে যেন-তেন আচরণ করার সাহস পায়। সরকারি ওষুধ বিক্রি করাসহ রোগীদের থেকে টাকা আদায় করা তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। কর্তৃপক্ষ জেনেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

হাসপাতাল চত্বরের কয়েকজন ওষুধ ব্যবসায়ী জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োজিত ওয়ার্ডবয় চান গাজীর বিরুদ্ধে রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা, রোগীদেরকে তার পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বাধ্য করা এমনকি চাহিদামত টাকা না দিলে রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা তার নিত্যদিনের ঘটনা। তবে এসবের পরেও কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওয়ার্ডবয় এ এইচএম চান গাজী টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমাদের যেহেতু বেতন নাই সেক্ষেত্রে রোগীরা খুশি মনে টাকা দিলে নেই। তবে জোর করে টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্যি নয়।

কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আবু তাহের পাটোয়ারী বলেন, রোগীদেরকে চাপ দিয়ে টাকা আদায়ের বিষয়টি মহা অন্যায়। এর আগে একই বিষয়ে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।