পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন পুনঃনির্বাচনের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে গুয়ারেখা ইউনিয়নের কয়েক শত মানুষ অংশ নেন। এসময় তাঁরা নির্বাচনের সময়ে সহিংসতা ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলার ছবি প্রদর্শন করেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৭ জুলাই নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী মিজানুর রহমান আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফারজানা আক্তারকে ৫১৭ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে বিজয়ী হন। ১৯ জুলাই পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারজানা আক্তার প্রধান নির্বাচন করিশনারের কাছে উপনির্বাচনে কাছে বিজয়ী চেয়ারম্যান গাজী মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে নির্বাচনের প্রচার প্রচারণায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি এবং নির্বাচনের দিন নৌকার সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ করেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয় ভোটের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের ধাওয়া করেন। পুলিশ প্রশাসনের সহায়তার নির্বাচনের মাঠে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেন। যার প্রমাণ ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর বিজয়ী প্রাথী গাজী মিজানুর রহমানকে এক পুলিশ কর্মকর্তা ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন। তবে প্রধান নির্বাচন করিশনারের কাছে অভিযোগ করার পর কমিশন কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ২৩ জুলাই ফারজানা আক্তার চারটি কেন্দ্রে পুনরায় নির্বাচন দাবি করে হাইকোটে রিট করেন। বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লার বেঞ্চ রিট গ্রহণ করে কেন চার কেন্দ্রে পুনঃনির্বাচন হবে না প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট বিভাগ রুল জারি করেছেন। হাইকোর্টের আদেশ পাওয়ার নির্বাচন কমিশন সচিবলায় কমিশনের উপসচিব মো. মঈন উদ্দীন খানকে অভিযোগের সরেজমিন তদন্ত করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। গত বুধবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার মো. মঈন উদ্দীন খান সরেজমিনে তদন্ত করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তদন্তচলাকালে চারটি ভোট কেন্দ্রে পুনঃনির্বাচনের দাবিতে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও পরে তারা বিক্ষোভ করেন।
রিটকারী আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারজানা আক্তার বলেন, উপনির্বাচনে আমাকে হারাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু নেতা ও প্রশাসন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রাথী গাজী মিজানুর রহমানের পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করেছেন। ভোটের দিন আমার কর্মীদের কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। পুলিশ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর হয়ে ভোটের মাঠে আমার লোকজনকে লাঠিপেটা করেছে। চারটি ভোট কেন্দ্রে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। এসব কেন্দ্রে প্রশাসনের সহযোগিতায় পুলিশ ভোটের পরিবেশ বিঘ্ন করে আমাকে সামান্য ভোটে হারিয়ে দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবলায় কমিশনের উপসচিব (বাজেট) মো. মঈন উদ্দীন খান এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি।