কক্সবাজারের উখিয়ার তেলখোলা বটতলী গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাত দলের প্রধান শেখ রাসেলসহ তার ছয় জন সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫ এর সদস্যরা। এসময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
বুধবার দুপুর ১২টার দিকে র্যাব-১৫ এর সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেজর সৈয়দ সাদিকুল ইসলাম ।
জানা যায় গতকাল রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পালংখালী ইউনিয়নের তেলখোলা গহীন পাহাড়ী এলাকায় একটি দুর্ধর্ষ ডাকাদলের অবস্থানের গোপন সংবাদ পায় র্যাব।পরবর্তীতে সে আস্থানায় হানা দেয় র্যাবের সদস্যরা। এসময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদলের সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করে তবে শেষমেশ র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয় দুর্ধর্ষ ডাকাতদলের প্রধান শেখ রাসেলসহ তার অপর ছয় সহযোগী।অভিযানে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও অস্ত্র। যেখানে ৬টি দেশীয় এক নলা বড় বন্দুক,২ টি এলজি,১২ রাউন্ড শর্ট গানের কার্তুজ,৭রাউন্ড রাইফেলের তাজা কার্তুজ,১ রাউন্ড খালি কার্তুজ,১ টি রাম দা ও ২০ হাজার পিস ইয়াবা।
গ্রেফতারকৃত ডাকাতদলের সদস্যরা হলেন থাইংখালীর মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে শেখ রাসেল ওরফে ডাকাত রাসেল(৩২),টেকনাফের রঙ্গীখালীর দুদু মিয়ার ছেলে মোঃ ছলিম(৩৮),আব্দুর শরীফে ছেলে নুরুল হাকিম(৪০),কবির আহমেদের ছেলে মোঃ নুরুল আমিন(৪২),নুরুল আমিনের ছেলে কায়সার উদ্দিন(২০),মৃত দিল মোহাম্মদের ছেলে সাদেক হোসেন(,৩০) ও টেকনাফ কাঞ্জরপাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে সাহাব উদ্দিন(২৫)।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদে ডাকাত দলের প্রধান দুর্ধর্ষ ডাকাত শেখ রাসেল (৩২) স্বীকার করে সে একজন তালিকাভুক্ত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এবং ডাকাত রাসেল নামে খ্যাত।এছাড়া রাসেলের সাথে স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধি সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের ছত্র-ছায়ায় সে এসব অপরাধসমূহ করে থাকে। ডাকাত রাসেলের নেতৃত্বে রাসেল বাহিনী নানাবিধ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংঘঠিত করত। এমন কি একাধিকবার বিজিবি, পুলিশ এবং ফরেস্টের ফোর্সদের উপর সশস্ত্র হামলা করেছে। সম্প্রতি প্রকাশ্যে না এসে অবৈধ বালু ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসা, খুনসহ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় নারীদের অপহরণসহ ধর্ষণের একাধিক অভিযোগ ডাকাত রাসেল বিরুদ্ধে রয়েছে। ডাকাতি, অপহরণ, মাদক, মারামারি, অস্ত্রসহ বিভিন্ন অপরাধে তার বিরুদ্ধে ১৫টির অধিক মামলা রয়েছে এবং সে একাধিক মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী বলে জানা যায়।
এছাড়া মোঃ ছলিমের বিরুদ্ধে ৩টি,নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে ৫টি, সাদেক হোসেনের বিরুদ্ধে ৬টি,সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে ৩টি এবং নুরুল হাকিমের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে।জিজ্ঞেসাবাদে আরও ৩ জন ডাকাতের তথ্য জানা যায় এবং তাদেরও আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যহৃত আছে বলে জানা যায় র্যাবের পক্ষ থেকে।
সম্প্রতি কক্সবাজার শহর'সহ জেলার অন্যান্য উপজেলায় প্রায় প্রতিনিয়তই ডাকাতি, অপহরণ, মাদক পাচার, ছিনতাই ও ধর্ষণের মত অপরা সংঘঠিত হচ্ছে। এসব ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।র্যাব-১৫ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় অপরাধের সাথে জড়িত চক্রগুলোকে গ্রেফতারসহ জেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি ও অভিযান পরিচালনা করে আসছে।