দেশের একমাত্র পাথর উৎপাদনকারি দিনাজপুরের মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি থেকে পাথর উত্তোলনে আবারো নতুন মাইল ফলক সৃষ্টি করেছে খনির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মাানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম জিটিসি।
খনির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিটিসি’র সাথে দ্বিতীয় দফায় চুক্তির পর চলতি বছরের গত জুলাই মাসে খনি থেকে একলাখ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে এ মাইল ফলক সৃষ্টি করেছে। এর আগে গত মে মাসেও এক লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টনের উপরে সর্বোচ্চ পাথর উত্তোলন করে খনির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান (জিটিসি)। এতে করে খনিটির মাসিক উৎপাদনের পূর্বের সকল রেকর্ডকে ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।
খনিকতৃপক্ষ জানায়, খনিতে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে পাঁচ হাজার মেট্রিকটন পাথর উত্তোলন হচ্ছে, বিক্রি হচ্ছে গড়ে সাড়ে তিন হাজার মেট্রিকটন। বর্তমানে খনি ইয়াডে চার লাখ মেট্রিকটনেরও অধিক পাথর মজুদ রয়েছে। মধ্যপাড়া খনি সুত্রে জানা গেছে,গত ২০০৭ সালের ২৫ মে পাথর খনির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পাথর উত্তোলন শুরু হয়। এক পর্যাযে লোকসানের বোঝা নিয়ে খনিটি বন্ধের উপক্রম হয়। এরপর কোরিয়ান নামনাম কোম্পানী পাথর উত্তোলন শুরু করলেও, খনিটি লাভের মুখ দেখতে পায়নি। পরে ২০১৩ সালে খনিটির বর্তমান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিটিসি’র সাথে চুক্তির পর থেকে খনিতে প্রতিদিন পাথর উত্তোলন হচ্ছে পাঁচ হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার মে.টন। এতেকরে খনিটি এখন লোকশানের গ্লানী মুছে এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে।
সুত্রটি আরও জানায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিটিসি খনির উন্নয়ন ও উৎপাদনকে গুরুত্ব দিয়ে পাথর উত্তোলন শুরু করে প্রথম দফায় চুক্তির মেয়াদে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকূলতা অতিক্রম করে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছর থেকে টানা চার অর্থ বছরে খনিটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে। যার ফলশ্রুতিতে প্রথম দফা চুক্তির মেয়াদ শেষে খনি কর্তৃপক্ষ আবোরো ছয় বছরের জন্য নতুন করে দ্বীতীয় দফা চুক্তি করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিটিসির সাথে। দ্বিতীয় দফা চুক্তির আলোকে মাসিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন।
দ্বিতীয় দফায় চুক্তির পর চলতি বছরের গত জুলাই মাসে খনি থেকে একলাখ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে,যা পূর্বের সকল রেকর্ডকে ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। দ্বিতীয় দফা চুক্তির প্রথম বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমান পাথর উত্তোলন করে এ মাইল ফলক সৃষ্টি করলো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে খনিতে পাথর উত্তোলন বৃদ্ধি পাওয়ায় একদিকে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে, অন্যদিকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে খনি সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণের অর্থনৈতিকসহ জীবন মানের উন্নতি হচ্ছে।
মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (এমজিএমসিএল) পাথর খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবু দাউদ মুহাম্মদ ফরিদুজ্জামান খনির বর্তমান অবস্থা নিশ্চিত করে বলেন, পৃথীবির বিভিন্ন স্থান থেকে ভূ-পৃষ্টের উপরীভাগ থেকে পাথর আহরণ করা হলেও, মধ্যপাড়া খনিতে ভূ-গর্বস্থল থেকে শীলা আহরণ করা হয়। এ কারনে এ পাথর সব থেকে শক্তিশালী ও গুনে-মানে উন্নত।
তিনি বলেন,দেশের প্রতিটি অবকাঠামোতে মধ্যপাড়া খনির পাথর ব্যবহার করলে যেমন টেকসই হবে, তেমনী ভাবে সরকারের রাজস্ব বাড়বে, এ কারনে তিনি দেশের সকল প্রকল্পে মধ্যপাড়া খনির পাথর ব্যবহারের আহবান জানিয়েছেন।