ঝালকাঠি শহরে ৫০ বছর ধরে রিকশার প্যাডেল ঘুড়িয়ে অর্থ উপার্জন করেন ৭২ বছরের বৃদ্ধ ফুলু মিয়া। বয়সের ভারে এখন বেশিক্ষণ রিকশা চালাতে পারেন না। ফুল মিয়া বয়সে বৃদ্ধ, তার উপর প্যাডেল চালিত রিক্সা। এখন আর আগেরমতো পেসেঞ্জার উঠেনা তার রিক্সায়। এতে আয়ও কমেছে তাঁর। বাজার দরের সাথে দৌরে পারছেননা ফুলু মিয়া।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া গ্রামে বসবাস করেন ফুলু মিয়া। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ঘরে তার স্ত্রী এক কন্যা এবং দুই পুত্র সন্তান থাকেন। এদের মধ্যে এক ছেলে অসুস্থ (পঙ্গু), অপর ছেলে দশম শ্রেনীতে পড়াশোনা করে, আর স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়েটিও থাকেন তার কাছে।
একদা তার রিক্সায় চড়তে চড়তে এই বৃদ্ধের দুর্বিসহ জীবন যাপনের গল্প শুনেন এক যাত্রী। গাজী শামিমুর রহমান নামের ঐ যাত্রী পুলিশ পরিদর্শক পদে ঝালকাঠিতে কর্মরত। ইন্সপেক্টর শামিম বর্তমানে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখায় (ডিএসবি) দায়িত্বরত আছেন।
ফুলু মিয়ার কাছে তার দুরবস্থার কথা শুনে ঐ পুলিশ কর্মকর্তা তার ফেসবুক আইডিতে একটি মানবিক পোষ্ট দেয়। সেই পোষ্ট ট্যাগ করেন তার বন্ধুদেরকেও। এরপর তিনি তার কয়েক বন্ধুর সহযোগীতা নিয়ে পৌনে একলাখ টাকা দিয়ে ব্যাটারী চালিত একটি রিকশা কিনে দেন।
বুধবার ২ আগষ্ট দুপুরে ফুলু মিয়ার হাতে তুলে দিয়েছেন গাজী শামিমুর রহমান। রিক্সা নিতে ঝালকাঠি পুলিশ অফিসে ফুলুমিয়ার স্ত্রীও আসেন। শুধু রিক্সাই নয় বৃদ্ধের পরিবারকে এক সপ্তাহের বাজার এবং ফুলু মিয়ার স্ত্রীর জন্য শাড়ি-কাপর কিনে দেন শামিম নামের মানবিক এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ পরিদর্শক গাজী শামিমুর রহমান ফ্রিডমবাংলাকে বলেন, 'ফুলু মিয়ার কষ্টের কথা শুনে কি করা যায় এই ভাবনায় পড়ে আমি বন্ধুদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করি। বন্ধুদের সহযোগিতায় ৭০ হাজার টাকা দিয়ে একটি নতুন রিকশা কিনে ফুল মিয়াকে উপহার দেই।