গত কয়েক দিনে গোঠা সিলেটে জনজীবন তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। হঠাৎ করে সিলেটের পরিবেশ হয়ে ওঠেছে অসহনীয়। এ অবস্থায় দীর্ঘ লোডশেডিং পরিস্থিতিকে আরো গুরুতর করে তুলেছে। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বয়োবৃদ্ধ লোকজন ও শিশুরা। অসুস্থদের অসুস্থতা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে এই প্রচন্ড গরমে।
সিলেট আবহাওয়া অফিস বলছে, সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী ২-৩ দিন এটা অব্যাহত থাকতে পারে। সমুদ্রে লঘুচাপের কারণে এ বছর সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টি কম হয়েছে। এর ফলে এ বছর সিলেট অঞ্চলে গরমটা বেশী অনুভূত হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলেই সিলেট নগরসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে তাপমাত্রা কমে আসবে। এদিকে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে তাপদাহে দগ্ধ সিলেট বিভাগের মানুষের ওপর।
রোববার সকাল থেকেই সিলেট বিভাগে বেড়েছে লোডশেডিং। ৪ শতাংশ লোডশেডিং করা হয়েছে ৩৬ শতাংশ, যা আরো বাড়বে বলে ধারণা করছেন কর্তৃপক্ষ।
এক সময় সিলেট জেলাসহ সিলেট বিভাগ ছিলো বৃষ্টিবহুল শীতল অঞ্চল। পাহাড় টিলা জঙ্গল বেষ্ঠিত এই জনপদের শান্ত শীতল পরিবেশ রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রিয় স্থান ছিলো সিলেট। অনেকে সুযোগ পেলেই বেড়াতে আসতেন, অবকাশ যাপন করতে আসতেন সিলেটে। কিন্তু দিন যতো যাচ্ছে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে। গাছপালা বৃক্ষনিধন ও টিলা পর্বত নির্বিচারে কাটার ফলে সিলেটের ভূপ্রকৃতির সাথে সাথে এর আবহাওয়ায়ও পরিবর্তন এসেছে। বৃদ্ধি পেয়েছে এ অঞ্চলের নগর ও শহর গুলোর বায়ুদূষণ।
সিলেট অঞ্চলের এক সময়ে এই অনন্য ও অতুলনীয় প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা ও এর আগের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নির্বিচারে বৃক্ষ ও টিলা কর্তন বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় এ ধরনের বৈরী আবহাওয়া বিশেষভাবে তাপদাহ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে না।
উষ্ণতা বৃদ্ধি ও তাপদাহ থেকে বাঁচতে সিলেট অঞ্চলসহ দেশব্যাপী অধিক হারে বৃক্ষরোপন এবং শহরাঞ্চলে বাড়ির ছাদে বাগান করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এর পাশাপাশি নতুন বাড়িঘর ও ভবন নির্মাণের সময় গ্রীণ অর্থাৎ পরিবেশ বান্ধব ভবন ও স্থাপনা নির্মাণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। আগামী দিন গুলোতে লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ আরো বাড়তে পাওে যেহেতু দেশে স্থায়ী বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি বিগত বছর গুলোতে। এ অবস্থায় উষ্ণতা বৃদ্ধি ও তাপদাহ থেকে বাঁচতে বাড়িঘর ও স্থাপনা নির্মাণে আধুনিক পরিবেশ বান্ধব নকশা ও পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
অন্যথায় তীব্র গরম ও তাপদাহে নানা ধরনের অসুখ বিসুখ বেড়ে জীবনযাত্রা মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হওয়ার সমূহ আশংকা।