ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ কেটে রাস্তা নির্মান করায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের আরুয়া গ্রামে এঘটনায় সর্বক্ষণ উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় "আরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়" এবং "সোনারগাঁও জে.এ.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়" নামে পাশাপাশি দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানে দুই স্কুলের আঙ্গিনা একটাই। দুই প্রান্তের মানুষ বিগতদিনে স্কুল দুটির মাঠের মধ্য থেকেই চলাচল করত।
সম্প্রতী ঐ এলাকার জিয়া হাওলাদার নামের এক কুয়েত প্রবাসী মাঠের মধ্য থেকে রাস্তা নির্মানের উদ্দোগ নেয়। কিন্তু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম বারী খান এতে আপত্তি জানান। তিনি বিকল্প সড়ক নির্মানের বিষয়ে এলাকাবাসীকে ভাবতে বলেন। মাঠে কাদা থাকায় দুই প্রান্তের মানুষের চলাচলের জন্য আপাততো মাঠের মধ্যে রাস্তার আদলে বালু ফেলতে পরামর্শ দেন জিয়া হাওলাদারের স্বজন ও প্রতিবেশীদের।
এদিকে স্কুল প্রতিষ্ঠাতার ভাতিজা সরোয়ার খান খেলার মাঠ রক্ষায় নিজের অর্থায়নে নিজের জমিতে বিকল্প সড়ক নির্মান করে দেয়। ১২ ফুট প্রস্থের এই সড়কটি মাধ্যামিক স্কুলের পেছন থেকে ঘুড়িয়ে দুই প্রান্তের পুরোনো রাস্তার সংযোগ করে দেন।
কিন্তু আধিপত্য বিস্তারে ঘাটতি হবে ভেবে জিয়া হাওলাদার ও তার লোকজন সরোয়ারের ব্যক্তিগত অর্থে বানানো সড়ক দিয়ে চলাচল করতে নারাজ। তারা স্কুল মাঠের মধ্যেই রাস্তা চায়। এই রেশ নিয়ে জিয়া হাওলাদারের অর্থে গত ২২ জুলাই শনিবার পুর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভোররাতে স্কুল মাঠের মধ্য দিয়ে ইট সলিং করে সিমেন্ট বালুর প্রলেপ দিয়ে রাস্তা নির্মান করেন স্থানীয় শাহজাহান গাজী, সোবাহান গাজী ও জিয়ার অন্য অনুসারীরা।
বিতর্কিত এই রাস্তা কেউ যদি ভেঙ্গে ফেলে, সেই আশংকায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে বিদেশে বসে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন প্রবাসী জিয়া হাওলাদার। এনিয়ে এলাকায়ও চলছে দু'পক্ষে বেশ উত্তেজনা।
পার্শবর্তী বিকল্প সড়ক থাকতেও কেনো স্কুলের খেলার মাঠ নষ্ট করে ব্যক্তি উদ্দোগে রাস্তা বানানো হলো তা নিয়ে অনুসন্ধানে বের হয় আধীপত্যই মাঠ নষ্টের কারন। এনিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে গোটা উপজেলার শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক মহলে। সাধারন এলাকাবাসীর দাবী মাঠ রক্ষা করা। তারা বলছেন, 'স্কুলের খেলার মাঠটি যেন ক্ষমতাবানদের রোষানলে পরে হারিয়ে না যায়।'
মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষক আলামিন হাওলাদার বলেন, 'মাঠের ভিতর দিয়ে যে সড়ক নির্মিত হয়েছে সেই সড়কটি থাকলে বাচ্চাদের এসেম্বিলি এবং খেলাধুলা করতে অসুবিধা হবে। তাছাড়া বিগত বছরে চলে আসা এলাকার সামাজিক অনুষ্ঠান, মাফফিল, জানাজা এসব কাজে জায়গা সংকট হবে। তাই মাঠটি রক্ষা করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব।'
সোনারগাঁও জে.এ.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, 'বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একমাত্র খেলার মাঠটুকু আছে, কিন্তু হঠাৎ এক রাতের মধ্যে রাস্তা নির্মাণ করেছে একটি পক্ষ।'
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম বারী খান বলেন, 'জনস্বার্থ এবং স্কুলের স্বার্থ দুটুই জরুরী। বিকল্প সড়ক নির্মানে যদি জনসার্থ রক্ষা হয় তাহলে মাঠ থাকবে।'
মাধ্যমিক এবং প্রাথমিক এই দুই শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, স্কুলের খেলার মাঠ রক্ষা করার সরকারী নির্দেশনা আছে। যদি অনেক বছর আগে ওখানে রাস্তা থেকে থাকে তাহলে জনগনের চলাচলের সার্থরক্ষার বিষয়টিও সরকার বিবেচনা করবে। সেক্ষেত্রে বিকল্প রাস্তাও হতে পারে'
স্কুল মাঠে রাস্তা কেনো? এবিষয় জানতে চাইলে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা 'নুসরাত জাহান বলেন, 'ঘটনা আমি শুনেছি, মাঠ রক্ষায় আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।