ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

বাবারে হানি বাড়লে ঘরো গু ঢুকি যায় মইল্লে কোনাই অইবো দাফন-প্রশ্ন রেহানার

জিহাদ হোসেন রাহাত, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | আপডেট: শুক্রবার, জুলাই ২৮, ২০২৩

বাবারে হানি বাড়লে ঘরো গু ঢুকি যায় মইল্লে কোনাই অইবো দাফন-প্রশ্ন রেহানার
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর মিয়ারহাট আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পেয়েছেন রেহানা বেগম(৫৫) নামে এক নারী। স্বামীহারা রেহানার মাথা গোঁজার স্থায়ী বন্দোবস্ত হওয়ায় ভীষণভাবে খুশি হন তিনি। ফুরোয় তার নিত্যদিনের দুঃখ। তবে চিরচেনা সে দুঃখ যে পুরোপুরি তার জীবন থেকে বিলীন হবে না সেটাও ছিলো রেহানা বেগমের অজানা। ঘর পেয়ে সুখের পরশ পেলেও সেই ঘরই এখন রেহানার দুঃখের কারণে পরিনত হয়েছে। দেশের দক্ষিণের  এই জনপদের খুব কাছেই মেঘনা নদীর অবস্থান। উপকূলীয় এলাকার এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে বর্ষায় মেঘের চাপা কান্না আর মেঘনার জোয়ারের পানি- এ দুই মিলে বহু কষ্টে দিনাতিপাত করছেন রেহানা বেগমসহ মিয়ারহাট আশ্রয়নের ৪৫টি পরিবার।

বছর কয়েক আগেও যাদের ছিল না কোনো মাথা গোঁজার ঠাঁই, তারা এখন রঙিন টিন আর আধপাকা বাড়িতে বসবাস করছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর যেন জীবন বদলে দিয়েছে এ উপজেলার প্রায় সহস্র মানুষের। একটা সময় অন্যের জমিতে দয়া-দাক্ষিণায় থাকা সেসব গৃহহীন-ভূমিহীন আজ আত্মনির্ভরশীল। কিন্তু এখানকার নানাবিধ সমস্যাই যেন তাদের আত্মনির্ভরশীলতার অন্যতম প্রধান বাধা। নিজেদের পয়োবর্জ্য নিয়েও বিপাকে এখানকার মানুষজন। বর্ষায় পানি জমে পয়োবর্জ্যের ঢাকনাযুক্ত কুপ থেকে ভেসে ওঠে নিজেদেরই পায়খানা।  থৈ থৈ পানিতে এই পয়োবর্জ্য ঘরে প্রবেশ করে তৈরি করে যাচ্ছেতাই পরিবেশ। বিধবা রেহানা বেগম এমনটিই জানালেন করুন কন্ঠে। আশ্রয়ণ প্রকল্পটির পাশেই রয়েছে একটি পুকুর তাও আবার ব্যাক্তি মালিকানাধীন। সেই পুকুরের মাটি কাটায় ফাটল ধরেছে রেহানা বেগমসহ অনেকের ঘরে। পুকুরটি ব্যাক্তি মালিকানায় হওয়ায় আশ্রয়ণের মানুষ সেটি ব্যবহার করতে গিয়েও থাকেন দ্বিধা দ্বন্দ্বে। 

রেহানা বেগম বলেন, বর্ষাকালে হানি জমি গু ভাসি উডে। ঘরো ঢুকি যায় বেগ্গিন। হুুইরের মাডি কাডনে আঁর ঘরকানও হাডি গেছে। বিধবা ভাতা দেয় সরকার। শেখ হাসিনারে ধইন্যবাদ জানাই। কিন্তু আঁই এক্কান চাইলের কার্ডও হাই ন। মরি গেলে আঙ্গোরে কবর দিবো কোনাই? আঙ্গো তো জাগা-জমি নাই রে বাবা।

শুধু রেহানা বেগম নন আক্ষেপ করেছেন বৃদ্ধ জয়নাল মাঝিও। মসজিদ না থাকায় নামাজ আদায়ও মনের মাধুরি মিশিয়ে করতে পারেন না বছর ৬০ বয়সী এ বৃদ্ধ।  তিনি বলেন, হানি উডলে ঘত্তন বাইরোইতাম হারি না। এন্নেও আঁডুত ব্যাথা, মাঝাত ব্যাথা, গিরায়-গিরায় ব্যাথা। শেখ হাসিনা আঙ্গোরে এক্কান মসজিদ করি দেক। বেকগইন ই ত দিছে হেতেনে। হানি যেন কম উডে হিয়ারলাই মাডি হালাইতো অইব। মসজিদ, কবরস্থানও লাগবো আঁঙ্গো।

মিয়ারহাটের আশ্রয়ণের সভাপতি মরন আলী বলেন, এখানে আমরা দুই বছর যাবৎ থাকছি। একটা মসজিদ আর কবরস্থান প্রয়োজন।