দিনাজপুরের ফুলবাড়ী'র প্রথম এমবিবিএস ডাক্তার বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এম এ কাইয়ুম গত মঙ্গলবার ১৩ জুন-সকাল ৮:৪৫ টায় ঢাকার 'এভার কেয়ার হাসপাতাল'-এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) মৃত্যূকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
বৃহস্পতিবার বাদ যোহর ফুলবাড়ী জিএম স্কুল ঈদগাহ মাঠে মরহুমের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজানা নামাজের আগে সেখানে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী ও ফুলবাড়ী থানা'র অফিসার ইনচার্জ মো. আশ্রাফুল ইসলাম এর নেতৃত্বে ফুলবাড়ী থানা পুলিশের একটি দল মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এম এ কাইয়ুম কে রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করেন। পরে মরহুমের বড় জামাতা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডক্টর এ টি এম মাহবুব ই ইলাহী তাওহীদ তাঁর জানাজার নামায পড়ান। এ সময় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ফুলবাড়ী পৌরসভা'র মেয়র মো. মাহমুদ আলম লিটন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. এছার উদ্দিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সমাজসেবক ও সাবেক 'এমপি' এ জেড এম রেজাওনুল হক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক জেলা আমির মো. আফতাব উদ্দিন মোল্লা, দিনাজপুর জেলা'র বর্তমান আমির মো. আনোয়ারুল ইসলাম, সবশেষে মরহুমের বড় ছেলে ব্যারিস্টার কামারুজ্জামান অনলাইনের মাধ্যমে তাঁর বাবার জন্য উপস্থিত মুসল্লিদের নিকট বক্তব্য পেশ করেন এবং দোয়া চান।
জানাজার নামাজে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিগন উপস্থিত ছিলেন, মরহুমের ছোট ভাই ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ, নজমুল হক জানাজা অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেন।
মরহুম ডা. এম এ কাইয়ুম ছিলেন ফুলবাড়ী অঞ্চলের প্রথম এমবিবিএস ডাক্তার। তিনি ১৯৬৫ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করার পর ১৯৬৬ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে প্রথম কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ১৯৬৭-১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে তাঁর পিতা (বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সমাজসেবক ডাক্তার আব্দুল গনি)-র পরামর্শে সরকারি চাকুরি ছেড়ে নিজ এলাকা ফুলবাড়ীতে এসে জনগনের চিকিৎসা সেবা শুরু করেন। নিজ এলাকার গরীব অসহায় রোগীদের স্বল্প মূল্যে চিকিৎসা প্রদান করে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেছেন।
ডা. এম এ কাইয়ুম একজন দীনদার, পরহেযগার মানুষ ছিলেন এবং ভালো চিকিৎসক হিসেবে এলাকায় তাঁর ব্যাপক খ্যাতি ছিল। তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী, ২ পুত্র, ৭ কন্যা রেখে যান। তাঁর ৯ সন্তান নিজ নিজ পেশায় খ্যাতি অর্জন করেছেন। তাঁর বড় পুত্র বিশিষ্ট আইনজীবী ও লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টার কামারুজ্জামান ও তিন মেয়ে লন্ডনের বিশিষ্ট চিকিৎসক। পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের তার জন্য দোয়া কামনা করেছেন।