ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

পঞ্চগড়ে চা পাতার ন্যায্যমূল্যসহ ৯ দফা দাবিতে মালিক সমিতির মানববন্ধন

জাবেদুর রহমান জাবেদ, তেতুলিয়া প্রতিনিধি | আপডেট: রবিবার, জুন ৪, ২০২৩

পঞ্চগড়ে চা পাতার ন্যায্যমূল্যসহ ৯ দফা দাবিতে মালিক সমিতির মানববন্ধন
জাতীয় দিবস উপলক্ষে পঞ্চগড়ে চা বাগান মালিক সমিতির ব্যানারে চৌরঙ্গী মোড়ে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের পাশে কাঁচা চা পাতার দাম সর্বনিম্ন ৪০ কেজি দর নির্ধারণ করার দাবি জানানো হয়েছে।

মানববন্ধনে চা বাগান মালিক সমিতির সভাপতি দিদারুল আলম, আনিসুজ্জামান নতুনসহ বাগান মালিকরা অবিলম্বে পঞ্চগড়ে অকশন মার্কেট দ্রুত বাস্তবায়ন, কাচা চা পাতার উপর কর্তন বন্ধ,  ফ্যাক্টরিতে দালালের মাধ্যমে পাতা নেয়া বন্ধ করা, সরাসরি চা চাষীদের কাছে পাতা ক্রয়, চা চাষীদের পাতার টাকা বাকি রাখা বন্ধ করার দাবিসহ ৯ দফা দাবি জানান। বক্তারা রশিদে সব পরিষ্কার ভাবে উল্লেখ করে কম্পানির সীল স্বাক্ষর প্রদান, প্রধানমন্ত্রী'র লাগানো চা তথা পঞ্চগড়ের চায়ের মান খারাপ, এমন নাটকের মূল হোতাদের মুখোশ উন্মোচন করা হোক (যারা বলছে পঞ্চগড়ের চায়ের মান খারাপ তারাই ব্লাক মার্কেটে সরকারের কর ফাঁকি দিয়ে সিন্ডিকেট করে যাচ্ছে), ব্লাক মার্কেটে ভালো মানের চা বিক্রি বন্ধ করার লক্ষ্যে প্রশাসনের পর্যাপ্ত পদক্ষেপ চান, ভরা মৌসুম কারখানা রেশনিংভাবে চালু রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করে প্রত্যেক কারখানার অন্তত ৫০% ক্যাপাসিটি প্রতিদিন রাখার এবং পঞ্চগড়ে সরকারিভাবে চা ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা করার দাবি চা বাগান মালিক সমিতির।

পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন,গত বছর জেলায় এক কোটি ৭৭ লাখ ৭৯ হাজার কেজি চা উৎপন্ন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২৬০ কোটি টাকা। দেশে মোট উৎপাদিত চায়ের ১৯ শতাংশ চা পঞ্চগড়ে উৎপাদিত হয়েছে। এবার দুই কোটি কেজি চা উৎপন্ন হবে বলে আশা করছেন চা সংশ্লিষ্টরা। এবার দুই কোটি কেজি চা উৎপন্ন হবে বলে আশা করছেন চা সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে নিবন্ধিত চা বাগান ৯ টি, অনিবন্ধিত ২১ টি এবং ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান আট হাজার ৩৫৫ টি, নিবন্ধিত দুই হাজার ৫৩ টিতে ১২ হাজার ৭৯ একর জমিতে চায়ের আবাদ হয়েছে। 

পঞ্চগড় উপজেলা সদরের ধাক্কামারা ইউনিয়নের নলেহাপাড়া গ্রামের ক্ষুদ্র চা চাষী আমিনার রহমান। তিনি অন্য ফসলের জমিতে দুই একর জমিতে চা বাগান করেছেন। সেই বাগানে উৎপাদিত কাঁচাপাতা বিক্রির জন্য ১৫ দিন থেকে বিভিন্ন কারখানায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। চা চাষি আমিনারের মতো পঞ্চগড়ের অধিকাংশ ক্ষুদ্র চা চাষির একই অবস্থা।

আমিনার রহমান বলেন, নর্থবেঙ্গল চা কারখানায় আমি পাতা দিতাম। তারা আমাকে ১৫ দিন থেকে ঘুরাচ্ছেন। তাদের অনুমতি নিয়ে বাগানে পাতা কাটতে হয়। পরদিন সেই পাতা না নিলে ফেলে দিতে হবে। ১৫ দিন থকে তিনি তারিখ দিচ্ছেন। পাতা উত্তোলনের আগের দিন মোবাইল ধরছেন না। এভাবেই আমার বাগানের পাতা বড় হয়ে যাচ্ছে। কারখানায় সময়মতো পাতা দিতে পারলে আমি মান অনুযায়ী ৪ থেকে ৫ পাতা পর্যন্ত দিতে পারতাম।

মূলত পঞ্চগড়ে ক্ষুদ্র চা বাগান এখন চা চাষিদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। লাভের গম, ভুট্টা, বাদামসহ বিভিন্ন ফসলের জমিতে চা উৎপাদন করে কাঁচা পাতা বিক্রি করতে পারছেন না চাষিরা। আবার দীর্ঘমেয়াদি ফসল হিসেবে তৈরিকৃত আশার চা বাগান কেটে অন্য ফসলেও যেতে পারছেন না। এ নিয়ে স্থানীয় চা চাষিদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।

কারখানা মালিকদের নানামুখী চালবাজির কারণে চা বিক্রি করতে না পেরে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করছেন চাষিরা। #