ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪ |

EN

তীব্র গরমে গাছের ছায়ায় বসলেও মিলছে না প্রশান্তি

আটোয়ারী, পঞ্চগড় প্রতিনিধি | আপডেট: শনিবার, জুন ৩, ২০২৩

তীব্র গরমে গাছের ছায়ায় বসলেও মিলছে না প্রশান্তি
ক'দিন ধরে দেশের অসহনীয় তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। এই তাপদাহ সবার মাঝেই এক অস্বস্তি ও অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। প্রচণ্ড এই গরমে বেশি বিপাকে পড়েছেন পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার খেটে খাওয়া মানুষজন। গরমের জন্য তারা ঠিকভাবে কাজ করতে পারছেন না। একটু কাজ করলেই হাঁফিয়ে উঠছেন তারা। এতোটাই গরম যে, গাছের ছায়ায় বসে থাকলেও মিলছে না প্রশান্তি।

উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের মধ্যকাটালী এলাকার কৃষক খাজিব উদ্দিন বলেন, সকালে উঠে ছাতা নিয়ে ক্ষেতে বের হয়েছি। কিন্তু ছাতা মাথায় দেওয়ার পরও কোনো লাভ হচ্ছে না। গরমের কারণে ক্ষেতে কাজ করা যাচ্ছে না। ঘাম বেশি হওয়ায় পিপাসা লাগছে এবং শরীর দূর্বল হয়ে যাচ্ছে।

একই এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ সোলেয়মান আলী, তাঁর দুঃখ-কষ্ট ভুলে গিয়ে হাসতে হাসতে বলেন, আমাদের শরীরের চামড়া গুলো গণ্ডারের চামড়ার মত হয়ে গেছে। রৌদ- বৃষ্টি কিছুই শরীরে লাগে না। তবে এবারের গরমটা অন্য রকম। কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নিতে হচ্ছে। বাতাসও নেই, একটু বৃষ্টি হলে আমার মত খেটে খাওয়া মানুষদের ভালো হয়।

প্রচণ্ড এ গরমে সবচেয়ে বিপদে আছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলো। রোদে তাকালেই চোখ যেন ঝাপসা হয়ে আসে। টানা গরম আর অনাবৃষ্টিতে মানুষের প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। ফ্যানের বাতাসেও গরম হাওয়া বের হচ্ছে। এর মধ্যে মরার ওপর খাঁড়ার ঘাঁ হয়ে এসেছে ঘন ঘন লোডশেডিং। লোডশেডিং হলে বাসার মধ্যে যেন দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা। শহরের তুলনায় গ্রামে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ আরও বেশি। বিশেষ করে গত এক সপ্তাহ ধরে গড়ে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। আরও জানিয়েছেন, এই গরমে শিশুরা সর্দি-কাশিসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হুমায়ূন কবীর 'নয়া দিগন্ত'কে বলেন, প্রচণ্ড গরমে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মানুষের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যখন বাইরের তাপমাত্রা মানুষের শরীরের চেয়ে বেশি মনে হবে এবং বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকবে,তখন একটু পর পর বেশি বেশি তরল খাবার ও পানি খেতে হবে। পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।

তিনি আরো বলেন, যারা বাইরে কাজ করেন তাদের বাইরের খাবার কম খেতে হবে। বিশেষ করে এই গরমে খাবারের দিকে একটু বেশি খেয়াল রাখতে হবে। গরমে মানুষের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেওয়ায় বমি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই বেশি বেশি বিশুদ্ধ খাবার পানি পান করতে হবে।

জেলা আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, শনিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত পঞ্চগড়ের সবোর্চ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।