বরগুনার আমতলী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে “ঈদ উপহারের নামে টিসিবির পণ্য বিতরণ” শিরোনামে অনলাইন পোর্টাল “বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ ডটকম” এ মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করা ও ওই প্রকাশিত নিউজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেইজবুক) প্রচার করে মানহানি করায় ওই পোর্টালের আমতলী উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্তপূর্বক ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন। আজ শনিবার দুপুরে বিবাদী মোঃ মনিরুল ইসলামের ব্যবহৃত মুঠোফোন জব্দ করে আমতলী থানা পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বিবাদী মোঃ মনিরুল ইসলাম আমতলী পৌরসভায় চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী (পরিছন্নতা কর্মী) ছিলেন। তাহার দায়িত্বে অবহেলা ও অসৎ আচরনের কারনে তাহাকে চুক্তিভিত্তিক চাকুরী থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময় পৌরসভার মাসিক পানির বিল ও পৌর কর পরিশোধ না করায় গত ১২ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে আমতলী পৌরসভার ওয়াটার সুপার মোঃ রুবেল মিয়া বিধি মোতাবেক তাকে বিল পরিশোধের জন্য নোটিশ প্রদান করেন। কিন্তু বিলে উল্লেখিত তারিখে পানির বিল পরিশোধ না করায় গত ১৭ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে তার বাসার পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারন হিসেবে বিবাদী পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ মতিয়ার রহমানকে অযথা দায়ী করে বিভিন্ন সময় স্বাক্ষীসহ স্থাণীয় লোকজনের নিকট তাহার সম্পর্কে মানহানীকর কুটুক্তি করিতে থাকেন। বিষয়টি বাদীসহ পরিবারের লোকজন জানিতে পারিয়া বিবাদী মনিরুল ইসলামকে এহেন কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করলে এতে সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২১ এপ্রিল ২০২৩ তারিখ রোজ শুক্রবার রাত ১০.১৯ টায় অনলাইন পোর্টাল “বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ ডটকম” এ বিবাদী মোঃ মনিরুল ইসলাম নিজ নামে “ঈদ উপহারের নামে টিসিবির পণ্য বিতরণ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে।
প্রকাশিত ওই সংবাদে বিবাদী বরগুনার আমতলী পৌরসভা কার্যালয়ে ঈদের উপহারের নামে টিসিবির পণ্য বিতরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সকাল থেকে পৌরসভায় মেয়রের কার্যালয়ে ব্যানার টানিয়ে টিসিবির পণ্য দেয়া হয়, সেটা সোস্যাল মিডিয়ায় মেয়রের ঈদ উপহার বলে প্রচার করা হয়। এতে ক্ষুব্দ ও বিভ্রান্তের মধ্যে পড়ে পৌরসভার সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ বলেন টাকা দিয়ে মাল কিনেছি আবার উপহার। আবার এক ভূক্তভোগী বলেন, টাকা দিয়ে পণ্য কিনতে গিয়েও ভোগান্তির শেষ নেই, গরমের মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে অনেক যুদ্ধ করে মাল পেয়েছি। কাল ঈদ টিসিবির পণ্যটা আগে পেলে আমাদের জন্য সুবিধা হত। অনেক টিসিবির পণ্য সময়মত না পেয়ে অনেক আগেই বাজার থেকে বেশী দামে কিনে নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। প্রকাশিত সংবাদে টিসিবির ডিলার, ট্যাগ অফিসার, ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বক্তব্য রয়েছে। তাহারা কেহই বিষয়টি জানেন না বলে সংবাদে উল্লেখ আছে। ওই সংবাদের ধারাবাহিকতায় গত ২৫ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে দুপুর ২.০০ টায় তার নিজ নামে ব্যবহৃত ফেইজবুক আইডিতে মেয়রের অনুমতি না নিয়ে তার ছবি, পরিচিতি ও অসত্য তথ্য দিয়ে উল্লেখিত সংবাদের লিংক ও “সংবাদ কর্মীর বাসার পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়” শিরোমান প্রচার করেন।
মামলার বাদী মেয়র মতিয়ার রহমানের ভাগ্নে মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, অনলাইন পোর্টাল “বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ ডটকম” এ উল্লেখিত সংবাদটি আমি, আমার মামা পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান ও স্বাক্ষীগন মুঠোফোনে দেখে একে অপরকে জানাই। প্রকাশিত সংবাদটি আদৌ সত্য নহে। ওই দিন মেয়র মহোদয় তার ব্যক্তিগত তরফ থেকে আলাদা প্যাকেটে তাহার কর্মী ও স্থাণীয় দুঃস্থ,,সহায় মানুষের মধ্যে ঈদ উপহার যেমন ১ প্যাকেট সেমাই ও ১ প্যাকেট দুধ বিতরণ করেছেন এবং ডিলারের অনুরোধে সে টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধণ করেছেন। যাহা উপস্থিত সাংবাদিকসহ সকলেই অবগত আছেন। বিবাদী মনিরুল ইসলাম পূর্বের ক্ষোভ থেকে আমাদের পরিবারকে স্থাণীয় জনসাধারনের কাছে অপদস্থ, হেয় প্রতিপন্ন করতে কৌসলে অসত্য তথ্য দিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে আমাদের পারিবারিক ও সামাজিকভাবে ছোট করেন। যাহার কারনে মেয়র মহোদয় ও আমরা পারিবারিকভাবে মানহানির স্বীকার হওয়ায় বিবাদী মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, বিবাদী মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করার পরে তার তদন্তভার আমার উপড় অর্পিত হয়েছে। আজ দুপুরে বিবাদী মনিরুল ইসলামের ব্যবহৃত মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে।