ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

পুলিশি নির্যাতনে যুবকের মৃত্যু, ঘটনায় থানায় হামলা, সংঘর্ষে আহত ৬০

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: মঙ্গলবার, নভেম্বর ২, ২০২১

পুলিশি নির্যাতনে যুবকের মৃত্যু, ঘটনায় থানায় হামলা, সংঘর্ষে আহত ৬০

রংপুরের হারাগাছ এলাকার নতুন বাজার পাকার মাথা এলাকায় পুলিশি নির্যাতনে তাজুল ইসলাম নামে এক যুবক নিহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সোমবার গভীর রাত (২ নভেম্বর) পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ জনতা হারাগাছ থানায় হামলা চালিয়ে আসবাবপত্রসহ মালামাল ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় ১০ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে।

 

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (ক্রাইম) মারুফ হোসেন দাবি করেন, তাজুল ইসলাম একজন মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী। মাদকবিরোধী অভিযানে তাকে আটক করে থানায় আনার সময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। তাকে কোনও নির্যাতন করা হয়নি। পরে নিহত তাজুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে থানায় এনে রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

 

তিনি আরও জানান, ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু সুবিধাবাদী লোক থানায় হামলা করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছেন। এ ঘটনায় থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের কাজে বাধা, থানায় হামলা ও ভাঙচুরে ঘটনায় একটি এবং অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে।

 

পুলিশের দাবি এ ঘটনায় কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।

 

তবে স্থানীয়রা জানান, ঘটনা পর ৫-৬ জনকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। তাদের দাবি, তাজুল ইসলাম মাদকসেবী নন এবং মাদকের ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত নন। তাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের পর নির্যাতন করে হত্যা করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিচার দাবি করেন স্থানীয়রা।

 

নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা আফজাল বলেন, আমার সামনে পুলিশ তাজুলকে গ্রেফতার করে হাতে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে নির্যাতন করেছে। পরে আমার সামনেই তার মৃত্যু হয়। অথচ এখন বলা হচ্ছে সে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী। এটা পুরোপুরি বানানো এবং মিথ্যা তথ্য।

 

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সোহরাব হোসেন বলেন, বাজারে সবার সামনে তাজুলকে আটক করা হয়। হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে মারধরের ঘটনাকে পুলিশ এখন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের দাবি জানান তিনি।

 

এদিকে ঘটনার পর থেকে পুলিশি হয়রানির ভয়ে নয়াবাজারসহ আশপাশের এলাকার বাড়ি-ঘর থেকে লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। বেশিরভাগ বাড়িতে পুরুষ সদস্য নেই। পুলিশ নিরীহ লোকদের মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

 

উল্লেখ্য, সোমবার সন্ধ্যায় হারাগাছ এলাকার নয়াবাজার পাকার মাথা নামক স্থানে পুলিশ তাজুল ইসলাম নামে এক যুবককে আটক করে। পরে হ্যান্ডকাফ পরা অবস্থায় নির্যাতন করলে তাজুলের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনার প্রতিবাদে গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ জনতার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও থানা ঘেরাও করে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।