ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

পারভেজকে পারভীন ভেবে পিত্তথলি কেটে ফেললেন ডাক্তার!

জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: সোমবার, মে ২২, ২০২৩

পারভেজকে পারভীন ভেবে পিত্তথলি কেটে ফেললেন ডাক্তার!

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলে সোনিয়া নার্সিং হোমে ভুল চিকিৎসায় এক যুবকের পিত্তথলি কাটার অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (২১ মে) দুপুরে ভুল চিকিৎসার শিকার যুবক মো. পারভেজ প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী হলেন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বোয়ালী গ্রামের কাদের শেখের ছেলে মো. পারভেজ।

অভিযোগে জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল পারভেজ পেটে প্যানক্রিয়াজের ব্যথা হওয়ায় সোনিয়া নার্সিং হোমের সার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মো. তুহিন তালুকদারের কাছে যান। এ সময় ওই চিকিৎসক পারভেজকে দেখে আল্ট্রাসনোগ্রাম ও এক্সরে পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওই নার্সিং হোম থেকে ওই রোগী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রিপোর্ট চিকিৎসককে দেখান। পরে চিকিৎসক রিপোর্ট দেখে তাৎক্ষণিক অপারেশনের কথা জানান।

চিকিৎসকের কথায় ওই দিন পারভেজের পেটে অস্ত্রোপচার করে পিত্তথলী কেটে ফেলেন চিকিৎসক তুহিন তালুকদার। অপারেশনের পর পিত্তথলী তার স্বজনদের দেখালেও পিত্তথলীতে কোনো পাথর ছিল না। পরে রোগীর স্বজনদের জানানো হয়, কেটে ফেলা পিত্তথলীতে কোনো ক্যান্সারের জীবাণু রয়েছে কিনা সেটার পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানোর কারণে পিত্তথলী নার্সিং হোমে রেখে দেন।

কয়েকদিন চিকিৎসা শেষে বকেয়া টাকা আদায় শেষে নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের ছাড়পত্র দেন। পরে রোগীর স্বজনরা ছাড়পত্র নিয়ে দেখতে পান রোগী পারভেজের ভুল চিকিৎসা করা হয়েছে। পারভেজের স্থানে পারভীন নামের এক নারীর রিপোর্ট দেখে সার্জারি চিকিৎসক তার পিত্তথলী কেটে ফেলেছেন। বিষয়টি চিকিৎসক ও নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে রোগী ও তার স্বজনদের কাছে তারা ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেন।

রোগী পারভেজের স্ত্রী তামান্না হাসান বিজলি জানান, চিকিৎসক তুহিন ও নার্সিং হোমের মালিক আবুল কালাম রিজভী ভুল চিকিৎসার জন্য শুধু দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। তারা নাকি অনেক ক্ষমতাধর টাকা দিয়ে সব ম্যানেজ করে ফেলবেন।

ভুল চিকিৎসার শিকার মো. পারভেজ জানান, একই দিনে তার সঙ্গে পারভীন নামে একজন নারী রোগীর পিত্তথলীর অপারেশন করা হয়। এতে ওই নারীর রিপোর্ট দেখে তার ভুল চিকিৎসা করেছেন ডাক্তার। পিত্তথলী কাটার পর থেকে এখনও পেটে ব্যথা হয়। ব্যথার জন্য নিয়মিত ব্যথানাশক ওষুধ খেতে হচ্ছে। ভুল চিকিৎসার প্রতিকার চাইলে নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ হুমকি দেন। পরে ভুল চিকিৎসা ও প্রতারণার কারণে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ভুল চিকিৎসায় তার যে ক্ষতি হয়েছে তার বিচার চান।

সোনিয়া নার্সিং হোমের মালিক আবুল কালাম রিজভী জানান, ওই রোগীর সঠিকভাবেই পিত্তথলীর অপারেশন হয়েছে। তবে তার রিপোর্টের স্থানে একজন নারীর রিপোর্ট চলে যায়। ওই দিন নার্সিং হোমে পাঁচটি অপারেশন হয়েছে। এ ছাড়া পিত্তথলীর বায়োপসি রিপোর্টটি হারিয়ে গিয়েছে।