সম্প্রতি এক রিপোর্টে উঠে এসেছে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি জলাশয় শুকিয়ে গেছে বা শুকিয়ে যাওয়ার মুখে। এর ফলে চরম পানির কষ্টের আশঙ্কা তৈরি হবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল তাদের সাম্প্রতিক গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করেছেন। সায়েন্স জার্নালে তারা গবেষণার তথ্য তুলে ধরেছেন। সেখানেই তারা লিখেছেন, বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি জলাশয় শুকিয়ে গেছে বা শুকিয়ে যাওয়ার মুখে। এর একটি কারণ অবশ্যই উষ্ণায়ন। তবে তার চেয়েও বড় বিষয় হলো মানুষের হঠকারিতা। একের পর এক জলাশয় ভরাট করা।
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিজ্ঞানের গবেষক ফ্যাংফ্যাং ইয়াও এই গবেষণা দলের প্রধান। তাদের বক্তব্য, ১৯৯০ সালের পর থেকে ক্রমশ লেক এবং বড় হ্রদগুলি শুকোতে শুরু করেছে। তাদের গবেষণা বলছে, কোনো কোনো জলাশয়ে প্রতি বছর ২২ গিগাটন করে পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। যা স্বাভাবিকের চেয়ে বহুগুণ দ্রুত।
এর একটি কারণ, মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ পানি তুলে নিচ্ছে। সেই পরিমাণ পানি নতুন করে আর জমছে না। দুই, বিশ্ব উষ্ণায়ন।
জলবায়ু পরিবর্তনের একটি অন্যতম মাপকাঠি গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধি। এর ফলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বদলে গেছে। আগে যেখানে যেমন বৃষ্টি হতো, এখন তা হচ্ছে না। এর ফলে স্বাভাবিক হ্রদগুলির পলি আগে যেভাবে জমতো, এখন তা বদলে গেছে। হ্রদ এবং জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ার এটাও একটা কারণ।
বিশ্বের দুহাজার জলাশয় এবং হ্রদ পর্যবেক্ষণ করে এই রিপোর্ট লেখা হয়েছে। ১৯৯২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এই হ্রদ এবং জলাশয়গুলির স্যাটেলাইট ছবি পরীক্ষা করা হয়েছে। এবং সেখান থেকেই এই ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।
বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে না পারলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরো হ্রদ এবং জলাশয় শুকিয়ে যাবে। একইসঙ্গে বদলাতে হবে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি।