পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় চার বছরের শিশু হাসিব হাওলাদারকে হত্যার দায়ে মো. মারুফ খান (৩২) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া লাশ গুম করার অপরাধে তাকে আরও ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহা. মহিদুজ্জামান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মো. মারুফ খান ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার আনইলবুনিয়া গ্রামের মো. আইউব আলী খানের ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সালে আসামি মো. মারুফ খানের সাথে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার মো. হাবিবুর রহমানের মেয়ে রিমা বেগমের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। এ ঘটনার জের ধরে ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর আসামি মারুফ খান তার স্ত্রী রিমা বেগমের ছোট ভাই ৪ বছরের শিশু হাসিব হাওলাদারকে তাদের বাড়ির উঠানে খেলাধুলা করার সময় খাবার খাওয়ানোর কথা বলে সেখান থেকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর মারুফ খান একা ওই বাড়িতে ফিরে আসলে পরিবারের লোকজন শিশু হাসিবের কথা জিজ্ঞেস করলে মারুফ খান শিশুটিকে নিয়ে যাওয়ার কথা অস্বীকার করে। এ ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ আসামি মারুফ খানকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মারুফ খান শিশু হাসিবকে হত্যা করে লাশ গুম করার কথা স্বীকার করে। পরে ফারুকের দেওয়া তথ্য মতে পুলিশ শিশুটির বসত বাড়ির পাশের বাগানের নর্দমার মধ্য থেকে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনার একদিন পর ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর নিহত হাসিবের বড় ভাই মো. নাসির হাওলাদার বাদী হয়ে ভান্ডারিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১০ আগস্ট ভান্ডারিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) মো. আশিকুল ইসলাম আদালতে অভিযোগ পত্র জমা দেন।
মামলার রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সরদার ফারুক হোসেন বলেন, দীর্ঘ শুনানি ও ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামি মো. মারুফ খানকে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং লাশ গুম করার অপরাধে ২০১ ধারায় তাকে আরও ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। রায় ঘোষনার পর আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।