সম্প্রতি অভিনয় শিল্পী সংঘের একটি অনুষ্ঠানে কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম প্রসঙ্গে নাট্যজন মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আমরা একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়েছি। আর সেখান থেকে হিরো আলমের মতো একজন মানুষের উত্থান হয়েছে। এরই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আলোচিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
সোমবার (২৭ মার্চ) ফেসবুক ভেরিফায়েড প্রোফাইলে এক পোস্টে তসলিমা লেখেন, ‘আজ অরুচি আর মিথ্যায় ঠাসা সমাজে নোংরা নষ্ট ওয়াজিরা, যেকোনো শিল্পী-সাহিত্যিকের থেকে বেশি জনপ্রিয়। অরুচি উৎপাদক হিরো আলম জনপ্রিয়। এর দায়ভার অবশ্যই রুচিকৃষকদের।’ তিনি লেখেন, ‘খরা এবং বন্যা মূলত তৈরি করে তারাই, যারা রুচির চাষ করে। তাদের তখন যথেষ্ট সময় নেই রুচি উৎপাদনের জমিকে উর্বর রাখার, তারা ব্যক্তিগত গোলার ফসল নিয়েই বা সাফল্য নিয়েই তখন তৃপ্ত।’
মামুনুর রশীদের করা ওই মন্তব্য প্রসঙ্গে কেউ হিরো আলমের পক্ষে, আবার কেউ মামুনুর রশীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এবার এ নিয়ে কথা বললেন আলোচিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তসলিমা লেখেন, ‘রুচির দুর্ভিক্ষ আচমকা আকাশ থেকে পড়ে না। প্রথমে খরায় বা বন্যায় রুচির উৎপাদন নষ্ট হয়। তারপর শুরু হয় দুর্ভিক্ষ।’
পরিশেষে তিনি লেখেন, ‘আসলে রুচি আর অরুচি চিরকালই পাশাপাশি বাস করেছে। রুচিকে ছাপিয়ে অরুচি যখন সর্বত্র বিরাজ করে তখনই কিছু লোক নড়ে চড়ে বসে। অরুচি তখনই সর্বত্র বিরাজ করে, যখন তাকে সর্বত্র বিরাজ করতে দেয়া হয়। রুচির পোশাকও গ্রাস করে নিয়েছে অরুচি। শাড়ির ওপর আটের দশকে মেয়েদের চাদর চাপাতে বাধ্য করা হয়েছিলো, একে মেনে নিলো সমাজ। শাড়ির ওপর এরপর হিজাব চাপানো হলো, এরপর বোরখা চাপানো হলো, এরপর নিকাব চাপানো হলো। এই পদ্ধতিতে শাড়ি হারিয়ে গেলো, প্রকট হয়ে উঠলো নারীবিরোধী অপসংস্কৃতি। মুখ বুজে থাকাই রুচিকে অরুচির কাছে সমর্পণ করে।’