দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে মাদকাসক্ত ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নয়ন চন্দ্র রায় (২১) নামে এক ছেলেকে ভ্রাম্যমান আদালতে তুলে দিলেন তার গর্ভধারিনী মা। ভ্রাম্যমান আদালতে মাদক সহ হাতে নাতে আটক হওয়ায় ওই ছেলেকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
রোববার দুপুর ১২টায় উপজেলার ৭নং শিবনগর ইউনিয়নের দাদপুর (মালিপাড়া) গ্রামে নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাদক সেবনের দ্বায়ে নয়ন রায় (২১) কে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দাদপুর (মালিপাড়া) গ্রামের শিবু রায় ও কিনা রানীর ছেলে নয়ন রায় (২১) বেশ কিছুদিন থেকে মাদক সেবন করে আসছে। নেশায় জড়িয়ে কাজ কর্ম না করে টাকার জন্য বাড়িতে প্রতিনিয়ত গন্ডগোল করে। বাবা মা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাড়ির জিনিস পত্র ভাঙচুর করে। প্রায়ই বাড়ির জিনিসপত্র বিক্রি করে মাদক সেবন করত। দুদিন আগেও বাড়ির নলকুপ, ঢেউটিন বিক্রি করে মাদক সেবন করে। এতে বাধা দিলে তার মা কিনা রানীর মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করে। মাদকের টাকা যোগাড় করতে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এমনকি নিজ বাড়িতে বাবা মার সামনেই গাজা সেবন করত। অনেক বুঝিয়েও পরিবর্তন না হওয়ায় বাধ্য হয়ে ভ্রাম্যমান আদালতে তুলে দিয়েছেন ভুক্তভোগী মা কিনা রানী।
ভুক্তভোগী কিনা রানী জানান, ছেলে মাদকের টাকার জন্য বাড়ির জিনিসপত্র চুরি করে। বাধা দিলে মারধর করে। তাই সবার পরামর্শে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। তাতে যদি ছেলেটা ভালো হয় এটাই কামনা করি।
৭নং শিবনগর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান দিলীপ চন্দ্র রায় বলেন, ছেলের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ করছিলেন তার মা। আমরা তাকে অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু সে পরিবর্তন হয়নি। তাই তার মা বাধ্য হয়ে ছেলেকে আইনের হাতে তুলে দিয়েছেন। প্রত্যেক বাবা মায়ের উচিৎ সন্তানকে মাদক থেকে দূরে রাখা।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী জানান, নিজ বাড়িতে মাদক সেবনের অভিযোগ পাওয়ার পর ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে হাতে নাতে নয়ন রায় কে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বাংলাদেশ দন্ডবিধির মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮সালের ৯ এর ৩৬(৫) ধারায় ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।