ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

জবি শিক্ষার্থীদের সাথে স্বপ্নপুরীর কর্মচারীদের সংঘর্ষ, গ্রেফতার ৮

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর | আপডেট: সোমবার, মার্চ ১৩, ২০২৩

জবি শিক্ষার্থীদের সাথে স্বপ্নপুরীর কর্মচারীদের সংঘর্ষ, গ্রেফতার ৮
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার বেসরকারি বিনোদন কেন্দ্র স্বপ্নপুরীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের সাথে স্বপ্নপুরীর কর্মচারীদের সংঘর্ষে ১০ শিক্ষার্থীসহ ১৩ জন আহত হয়। এ ঘটনায় ৮জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রোববার (১২ মার্চ) দিবাগত রাত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অনামিকা আক্তার বাদি হয়ে নবাবগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

মামলা সূত্র ধরে রোববার (১২ মার্চ) রাতেই অভিযান চালিয়ে নারীসহ ৮জন আসামীকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। এদের মধ্যে ৫ জন স্বপ্নপুরী কর্মচারী এবং তিনজন বহিরাগত রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ।

আটককৃতরা হলেন, সবুজ মিয়া (২৯), রেজওয়ান আহম্মেদ (১৮), আশরাফুল ইসলাম (১৭), প্রভাস কিস্কু (৩৬), আজিজুল হক (৩৯), জাহিদুল ইসলাম (৪৫), মানিকুল ইসলাম (৩২) ও সালমা আক্তার (২১)।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত রোববার (১২ মার্চ) সকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ১৪তম ব্যাচের ৭৩ জন শিক্ষার্থীসহ ১২ জন শিক্ষক কর্মচারীর একটি দল ফিল্ড ওয়ার্কে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি পরিদর্শনে যায়। খনি পরিদর্শন শেষে বিকেল সাড়ে ৩ টায় জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার বেসরকারি বিনোদন কেন্দ্র স্বপ্নপুরী বেড়াতে যায়। এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থী ঘোড়া রাইডে ওঠেন। পরে রাইড থেকে নামার সময় শিক্ষার্থী বিনয় চন্দ্রের একটি ব্যাগ ভুলঃবশত ছাড়া পরে। পরবর্তীতে ওই ব্যাগ ফেরত নিতে গিয়ে এক নারী শিক্ষার্থীকে স্বপ্নপুরীর কর্মচারী উত্যক্ত করলে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করে। এতে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে স্বপ্নপুরীর কর্মচারীরা দেশিও অস্ত্র (লাঠি, সোটা, রড) দিয়ে শিক্ষার্থীদের বেদম মারপিট করে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থী আহতসহ কয়েকজন শিক্ষক লাঞ্ছিতের শিকার হন। পুলিশ আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে প্রথমে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করালে,৫জনের অবস্থার অবনতি হলে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে ওইদিন রাত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অনামিকা আক্তার বাদি হয়ে নবাবগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

বিনোদন কেন্দ্র স্বপ্নপুরীর সত্ত্বাধিকারী ও দিনাজপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি নিয়ে মিমাংসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা তা না মেনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় যা হবে আমরা তাই মেনে নেবো।

নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনাটি দুঃখজনক। এ ঘটনায় রোববার রাতেই ৮জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অনামিকা আক্তার। মামলা পেয়ে এক নারীসহ ৮জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (ভূগোল) মাহি উদ্দিন মাহী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৭৩ জন শিক্ষার্থী ও ১০ জন শিক্ষক-কর্মচারীসহ মোট ৮৩ জনের একটি দল ফিল্ড ওয়ার্কে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি পরিদর্শন শেষে বিনোদন কেন্দ্র স্বপ্নপুরীতে বেড়াতে গেলে শিক্ষার্থীরা রাইডসে উঠার একপর্যায়ে নারী শিক্ষার্থীকে স্বপ্নপুরীর কর্মচারীরা ইভটিজিং করায় শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে এই সংঘর্ষ ঘটে। এসময় স্বপ্নপুরীর কর্মচারীরা দেশিও অস্ত্র (লাঠি, সোটা, রড) দিয়ে শিক্ষার্থীদের বেদম মারপিট করে। এতে ১০ শিক্ষার্থী আহতসহ কয়েকজন শিক্ষক লাঞ্ছিত হয়। চিকিৎসার জন্য বের হতে চাইলে স্বপ্নপুরী কর্তৃপক্ষ আমাদের বের হতে দেয়নি। পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আনমিকা আক্তার বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এরকম নির্দয় ঘটনা আর কারো সাথে যেনো না ঘটে এজন্য আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।