এক বাবার একমাত্র ছেলে রবিন হোসেন শান্ত (২৩) ঢাকায় সিদ্দিকবাজারের বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। তবে নতুন বিবাহ করে বউ ঘরে তোলেননি এখনো। আশা ছিল ঈদের পর ধুমধাম করে বউকে ঘরে তুলবেন। তার আগেই বাবা মায়ের স্বপ্ন কেড়ে নিলো তার প্রাণ। গুলিস্তানে সিদ্দিকবাজারে ৭ হাজার টাকা বেতনে একটি সিরামিকের দোকানের একজন কর্মচারী ছিলো।
সে গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের পূর্ব নাগেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব সরদারের (৫৫) র ছেলে।
নিহতের লাশ বুধবার (৮ মার্চ) রাতে শরীয়তপুরের নাগেরপাড়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের পূর্ব নাগেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নিহত রবিন হোসেন শান্তকে গতকাল বুধবার দাফন করা হয়েছে।
সম্প্রতি মঙ্গলবার (৭ মার্চ) রাজধানী ঢাকার গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে তার। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে পাগলপাড়া ও আত্মহারা হয়ে পড়েছেন শান্তর বাবা-মা। অন্য দিকে মর্মাহত হয়ে অঝড়া হয়ে কাড়ছেন তার স্ত্রী।
নিহত শান্তর বাবা সোহরাব সরদারের (৫৫) বলেন, 'একটা মাত্র ছেলে ছিলো, আমার কোন মেয়েও নাই। আমি কি অপরাধ করলাম যেন আল্লাহ আমার বুকটা খালি করে নিলো। কয়েকমাস আগেই বিয়ে করালাম এখনো বউ ঘড়ে তুলতে পারলাম না। আমার ও বেচে থাকার কোন অধিকার নেই। আল্লাহ তুমি কি করলা!
শান্তর মা তাসলিমা (৪৫) বলেন,'বিধাতা তুমি বলে দাও আমি কি করবো? আমার ছেলের নতুন বউকেও ঘরে তুলতে পারি নাই। তার আগেই আমার বাজানে চলে গেলো। আর আমার অসুস্থ স্বামীরে কিভাবে ঔষুধ কিনে খাওয়াবো! আমার তো আর কেউ রইলো না।
শান্তর স্ত্রী জিয়াসমিন (১৮) বলেন, আমি এখন কী করব? আমার কী হইব? আমার শ্বশুর বৃদ্ধ মানুষ, নিজেই এখন খেতে পারবেন না। আমি স্বামীর ঘর করার আগেই বিধবা হইলাম। ইয়া আল্লাহ তুমি আর কারও সাথে এমনটা কইরো না।
অসহায় পরিবারটির হাল ধরার আশ্বাস দিয়েছেন সোহরাব সরদারের পালক পুত্র শাহাদাত হোসেন। সে ঢাকায় গার্মেন্টসের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ৩ জন নিখোজ রয়েন বলে জানা যায়।