ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, অক্টোবর ২৪, ২০২১
পীরগঞ্জের
মাঝিপাড়ার হিন্দুপল্লীতে হামলার মূল উসকানিদাতা হিসেবে
যাকে র্যাব চিহ্নিত
করেছে, সেই সৈকত মণ্ডলকে
সংগঠন থেকে ‘বহিষ্কারের’ কথা জানিয়েছে রংপুর
ছাত্রলীগ।
র্যাবের অভিযানে সৈকত গ্রেপ্তার হওয়ার
পরদিন শনিবার রংপুর কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের পক্ষে
থেকে সৈকতসহ দুজনকে সাংগঠনিক পদ থেকে ‘অব্যাহতি’
দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আসে সাংবাদিকদের কাছে।
আর মহানগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন বহিষ্কারের কথা।
তবে
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সৈকতকে
১৮ অক্টোবরই কারমাইকেল কলেজ শাখা থেকে
অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মাঝিপাড়ায়
হামলাটি হয়েছিল ১৭ অক্টোবর রাতে,
আর র্যাব শুক্রবারই
সৈকতকে গ্রেপ্তারের কথা জানায়।
রংপুর
মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আসিফ হোসেন
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত ১৮ অক্টোবর
মাঝিপাড়ায় ঘটনায় সরাসরি অংশ নেওয়ার প্রমাণ
পাওয়ায় দর্শন বিভাগ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ
সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার
করা হয়েছে সৈকতকে। একই ঘটনায় কারমাইকেল
শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তানজিরুল ইসলামকেও বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ।”
বিজ্ঞপ্তিতে
সৈকত ও তানজিরকে অব্যাহতি
দেওয়ার কথা বলা হয়েছে,
যা এসেছে কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি
সাইদুজ্জামান সিজার ও সাধারণ সম্পাদক
জাবেদ আহমেদের নামে।
বিজ্ঞপ্তিতে
বলা হয়েছে, ‘দলীয় শঙ্খলা পরিপন্থি
কার্যকলাপে লিপ্ত থাকায়’ সৈকত ও তানজিরকে
কলেজ শাখা থেকে অব্যাহতি
দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রলীগে
রংপুর মহানগর শাখারই অধীনে কলেজ শাখা; আর
কাউকে বহিষ্কারের এখতিয়ার কলেজ শাখায় না
থাকলেও জেলা বা মহানগর
শাখার রয়েছে।
সৈকতকে
গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তারের পর
শনিবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে তাকে পীরগঞ্জে
হিন্দুপল্লীতে হামলার মূল ‘উসকানিদাতা’ হিসেবে
তুলে ধরা হয়।
সংবাদ
সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র
কমান্ডার খন্দকার আল মঈনকে সাংবাদিকরা
প্রশ্ন করেছিল সৈকতের সাংগঠনিক পরিচয়ের বিষয়ে।
জবাবে
তিনি বলেন, “রংপুরের ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে নিজেকে
ফেইসবুকে প্রচার করতে পারেন (সৈকত),
এই সংক্রান্ত কোনো তথ্য তিনি
র্যাবকে জানাননি। তিনি কোনো দলের
নেতা বা কর্মী, এরকম
কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি।”
গ্রেপ্তার
সৈকত মণ্ডল (মাঝের দুজনের মধ্যে ডানে) ও রবিউল ইসলাম
(বাঁয়ে)গ্রেপ্তার সৈকত মণ্ডল (মাঝের
দুজনের মধ্যে ডানে) ও রবিউল ইসলাম
(বাঁয়ে)
র্যাবের মুখপাত্র আরও বলেন, “ফেইসবুক
পেইজে তিনি (সৈকত) বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের
মিথ্যা প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনি পড়েন এক
কলেজে, কিন্ত ফেইসবুকে অন্য একটি কলেজের
ছাত্রনেতা হিসেবে দাবি করছেন। কোনো
সময় নিজেকে ছাত্রনেতা বলেছেন, কোন সময় তিনি
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।”
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সৈকতের কলেজের নাম উল্লেখ করা
হয়নি। এতে বলা হয়েছে,
সৈকত রংপুরের একটি কলেজে স্নাতকে
অধ্যয়নরত।
দুর্গাপূজার
মধ্যে কুমিল্লার ঘটনার পর গত ১৭
অক্টোবর রাতে পীরগঞ্জের এক
হিন্দু তরুণের ফেইসবুকে ধর্মীয় অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে
রামনাথপুর ইউনিয়নে পাঝিপাড়ার হিন্দু পরিবারের উপর হামলা হয়।
র্যাব মুখপাত্র আল
মঈন বলেন, ফেইসবুকে অনুসারীর সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে সৈকত ‘ধর্মীয় উস্কানিমূলক’ পোস্ট দিয়েছিলেন। সৈকতের নির্দেশে স্থানীয় মুয়াজ্জিন রবিউল পাশের মসজিদের মাইক থেকে লোকজনকে
জড় হওয়ার জন্য প্রচার চালিয়েছিলেন।
লোকজন জড়ো হলে একটি
উঁচু ঢিবির উপর দাঁড়িয়ে লোকজনকে
উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ও রবিউল
আত্মগোপনে চলে যান।
সেই
রাতে পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ২৩টি বাড়িঘরে হামলা,
ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা
ঘটে।