ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

একজন ইমামের বাঁচার আকুতি

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর | আপডেট: সোমবার, ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০২৩

একজন ইমামের বাঁচার আকুতি
আত্মহত্যা যদি নিকৃষ্ট পাপ না হতো তবে এতোদিনে আমি আত্মহত্যা করতাম। কারণ এই চোয়ালের ব্যথা সহ্য করার চেয়ে মৃত্যু অনেক সহজ। আমি এই ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে চাই। আমি বাঁচতে চাই। কথাগুলো বলেন ইমাম ও খতিব মো. রহমত উল্ল্যাহ। 

চোয়ালে ব্যথা থেকে মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুণছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার পৌরএলাকার স্বজনপুকুর বুন্দিপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মো. রহমত উল্ল্যাহ।ছেলেকে বাঁচাতে চিকিৎসা দায়িত্ব বা আর্থিক সহযোগিতা কামনা করছেন তার বৃদ্ধ বাবা সোবহান আলী।

ইমাম ও খতিব মো. রহমত উল্ল্যাহ ওই এলাকার মুদি দোকানী বৃদ্ধ সোবহান আলীর ছোট ছেলে। মো. রহমত উল্ল্যাহ তিন সন্তানের জনক।

ছেলের চিকিৎসা খরচ চালাতে গিয়ে জায়গা জমি বিক্রিসহ সর্বস্ব দিয়ে এখন সর্বশান্ত বৃদ্ধ পিতা সোবহান আলী। বয়সের ভারের সাথে বাড়তি ভাড় এখন ধারদেনাসহ ঋণের বোঝাও। সব মিলিয়ে হাঁপিয়ে গিয়ে দেশবাসীর কাছে ছেলের প্রাণ বাঁচাতে সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
 
জানা যায়, মো. রহমত উল্ল্যাহের  বাম চোয়ালের দাঁতের ছোট্ট সমস্যা দেখা দেয়। যা থেকে প্রচন্ড ব্যাথায় ভুগতেন রহমত উল্ল্যাহ। ডাক্তারের পরমর্শ নিয়ে সেই দাঁতটি তুলে ফেলেন। তবুও ব্যথা কমেনি। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৩ বছর আগে ঢাকায় চিকিৎসা শুরু করান। বর্তমানে ইমাম ও খতিব মো. রহমত উল্ল্যাহ ঢাকা মোহাম্মদপুরের সোরোয়ার্দী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছেন। সেখানে ১০৫নং ওয়ার্ডের ৪৫নং বেডে রয়েছেন। সেখানে ৬ বার অপারেশন করতে হয়েছে তাকে।  পরে তার চোয়ালে ক্যান্সার ধরা পড়ে।

মৃত্যুযন্ত্রণাদায়ক ব্যথা কমাতে প্রতিদিন তাকে ১ হাজার ৩০০ টাকা মূল্যে তিনটি মোট ৩ হাজার ৯০০ টাকার তিনটি ইনজেকশন দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও আছে হাসপাতালের ওষুধসহ অন্যান্য ব্যয়। এ ব্যয়বহন এখন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে তার পরিবারের সদস্যদের।
 
চিকিৎসক  জানিয়েছে আরো বেশকিছু দিন হাসপাতালে থাকতে হবে রহমত উল্ল্যাহকে। এ জন্য প্রয়োজন আরো অনেক টাকা। যা দিয়ে অপারেশন করা হবে রহমত উল্ল্যাহের।
 
পিতা সোবহান আলী বলেন, আমার যা ছিল তা দিয়ে এতোদিন ছেলেকে বাঁচানোর প্রাণপন চেষ্টা করেছি। বর্তমানে সর্বস্ব দিয়ে সর্বশান্ত হয়েছি। আর কোনো উপায় নেই ছেলের চিকিৎসা খরচ বহণ করার। বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসা চলছে। যার খরচ দেওয়াও আর সম্ভব হচ্ছে না। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের বিত্তবান ব্যক্তিদের কাছে আমার ছেলেকে বাঁচাতে চিকিৎসা দায়িত্ব বা আর্থিক সহযোগিতা কামনা করছি। 

ইমাম ও খতিব মো. রহমত উল্ল্যাহের স্ত্রী রুবিনা বেগম জানায়,সংসারের একমাত্র উপাজনশীল ব্যাক্তি তার স্বামী দির্ঘ তিন বছর ধরে চিকিৎসাধীন
রয়েছে। তার স্বামীর অসুস্থতায় তিন সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে এবং তার চিকিৎসা খরচ বহন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই সমাজের বিত্তবানদের প্রতি সাহায্যের আকুল আবেদন জানিয়েছেন তিনি।