লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মো. রাসেল হোসেন (১৪) নামের এক কিশোর নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউপির মিয়ারহাট এলাকায় মেঘনা নদীর পাড়ে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
নিহত কিশোর মো. রাসেল (১৪) দক্ষিণ চরবংশী ইউপির চরকাচিয়া গ্রামের বেপারি বাড়ির ভুট্টো বেপারির ছেলে।
আটকরা হলেন- চরবংশী ইউপির আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহজালাল রাহুল। তিনি কাছিয়ার চর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। সদরের খিলবাইচা গ্রামের জাকারিয়া, পর্ব নন্দনপুর গ্রামের সোহাগ, কাছিয়ার চর মো. সুমন ও বৃদ্ধ মিনা বেপারি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতা রাহুল ও স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। বুধবার দুপুরে মেঘনার ওপারে টুনুরচরে একটি ব্রিজ উদ্বোধন করার কথা রয়েছে স্থানীয় সাংসদ অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের। সকাল থেকে রাহুলের গ্রুপ ও নজরুল ইসলামের গ্রুপ নদীর পাড়ে এমপিকে বরণ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
এ সময় তুচ্ছ ঘটনায় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রাহুলের মাছঘাটের ম্যানেজার ফারুখ কারিকে মারধর করে নজরুল ইসলামের শ্যালকসহ লোকজন। এতে দুই গ্রুপে সংঘর্ষ লেগে যায়। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২০ জন মারাত্মক আহত হন। ঘটনাস্থলেই ইউপি সদস্য নজরুলের ভাতিজা মো. রাসেল নিহত হন। আহতদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা শাহজালাল রাহুল বলেন, এমপি সাহেব নদীর ওপাড়ে টুনুর চরে ব্রিজ উদ্বোধন করবেন বলে তাকে বরণ করতে নেতাকর্মীরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের শ্যালক আমার মাছঘাটের ম্যানেজার ফারুখ কারিকে মারধর করেন। আমি শুনে ঘাটে গেলে তারা আমাকেও মারধর করেছেন। আমি ওই কিশোরকে খুন করিনি।
এ ঘনায় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, মেঘনার নদীর ওপারে টুনুর চরে আমার তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করা ব্রিজ উদ্বোধন করবেন এমপি সাহেব। সেজন্য আমার লোকজন মাছঘাটে অপেক্ষা করছিলেন; কিন্তু এর আগেই রাহুলের লোকজন মারামারি করে আমার ভাতিজাকে খুন করেছে। আমি বিচার চাই। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
রায়পুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিন থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। আমি ও ৪ পুলিশসহ ১৫-২০ জন আহত হয়েছি। নিজেদের মধ্যে কোন্দলে কিশোর খুন হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পেয়েছি। আমরা আওয়ামী লীগ নেতা শাহজালাল রাহুলসহ ৫ জনকে আটক করেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নদীর পাড়ে মিয়ারহাট স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।