মোদের গরব মোদের আশা,আ-মরি বাংলা ভাষা। ভাষা আন্দোলন,ছয়দফা সহ পুরো কোচের বাহিরের অংশে রং দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নানা ইতিহাস,কোচটি দাঁড়িয়ে আছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী স্টেশনে। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন সকালে স্টেশনে গিয়ে দেখা মেলে শিক্ষার্থীরা সহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ জাদুঘর দেখতে ভিড় করেছন। সকলের কৌতুহল ভিতরে প্রবেশ করে জাদুঘর প্রদর্শণ করা। সেখানে কেউ সেলফি তুলছেন,কেউবা কোচের ভেতরে ঢুকে ঘুরে ঘুরে দেখছেন। নানান রঙে রাঙানো ওই কোচটি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর’।
জানা গেছে,মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে বিনম্্র শ্রদ্ধা জানাতে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতা,মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধু’র আংশিক জীবনি তুলে ধরতে রেলপথ মন্ত্রণালয় এই জাদুঘরটি নির্মাণ করেছেন। স্থিরচিত্র, রেপ্লিকা ও ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে পরিপাটি করে সাজানো হয়েছে পুরো জাদুঘর। জাদুঘরটিতে ১৯২০ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ১২টি গ্যালারির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। কোচটি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কোচের ভিতোরে প্রবেশ করতেই কানে ভেসে আসে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ। দরজার পাশে মুজিব শতবর্ষের লোগো। রয়েছে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে ভিডিও চিত্র। জাদুঘরটিতে রাখা হয়েছে জাতির পিতার টুঙ্গিপাড়ার বাড়ির আলোকচিত্র,জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ছবি। আছে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত চশমা,দলীয় প্রতীক নৌকা,মুজিব কোট,তামাকের পাইপ,বঙ্গবন্ধুর লেখা বই, পাকিস্থানিদের আত্মসমর্পণের আলোকচিত্র,মুজিবনগর স্মৃতিস্তম্ভ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও বঙ্গবন্ধু সমাধি সৌধের রেপ্লিকা। রেল কোচের এক পাশে ছোট্ট পরিসরে জয় বাংলা ¯েøাগানের আদলে তৈরি করা হয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন বুকশেলফ। সেখানে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর লেখা বিভিন্ন বই এবং তাঁর কর্মময় জীবনের ওপরে লেখা বিভিন্ন লেখকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বই। রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা বই ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’।
ফুলবাড়ী রেলষ্টেশনের মাষ্টার খাইরুল ইসলাম জানান, সোমবার রাতে পার্ববতিপুর রেলওয়ে জংশন থেকে ফুলবাড়ী এসে পৌঁছায়। বর্তমানে এটি স্টেশনের ৩ নম্বর প্লাটফমের পূর্ব দিকে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় জাদুঘরটি। বুধবার সারাদিন এটি ফুলবাড়ী রেলস্টেশনে থাকার পর রাতেই বিরামপুর অভিমুখে রওনা দেবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত এবং বিকেল ৩টা থেকে সন্ধা ৭টা পর্যন্ত জাদুঘরটি সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকে। বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা বয়সের দর্শনার্থীরা আসছেন সেখানে। বিনা মূল্যে সবাই ঘুরে দেখছেন সেটি। ভ্রাম্যমাণ এই রেল জাদুঘরটি,সিডিউল অনুযায়ী প্রতিটি স্টেশনে দাড়ায় দর্শনার্থীদের প্রদর্শনের জন্য।