রাজধানীর গুলশানে ১২তলা ভবনে আগুন লাগলে নিজেকে বাঁচাতে লাফিয়ে পড়েন শামা রহমান সিনহা (৩৭) নামের এক নারী। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন তিনি।
তার আগে আগুনে ঝলসে যায় এ নারীর পিঠের কিছু অংশ। রাতেই তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
সেখানে প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেনের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। বর্তমানে ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে ওই নারীর চিকিৎসা চলেছে বলে জানিয়েছেন ডা. সামন্ত লাল সেন।
এদিকে জানা গেছে, আহত শামা রহমান সিনহার স্বামীর নাম ফাহিম সিনহা। ফাহিম একমি গ্রুপের পরিচালক। এছাড়া জাতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও আবাহনী ক্রিকেট একাডেমির পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
স্বামীসহ গুলশানের ওই ভবনের ১২ তলায় থাকেন শামা রহমান জানালেন ফাহিমের পারসোনাল অ্যাসিস্টেন্ট মো. ইসমাইল হোসেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এই পরিবারের কেয়ারটেকার মারা গেছেন। এছাড়া বাবুর্চি ও গৃহকর্মী গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এখন।
তিনি বলেন, ওই ভবনের ফ্ল্যাটে মা, স্ত্রী শামা ও ১ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে থাকেন ফাহিম রহমান। তাদের বাসায় বাবুর্চির কাজ করেন রাজু (৩২), বুয়া রোজিনা আক্তার (২২)। এছাড়া কেয়ারটেকারের কাজ করতেন আনোয়ার। রাজু আহত হয়ে এখন গুলশান সিকদার হাসপাতালের আইসিইউতে ও রোজিনা ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আনোয়ার মারা গেছে। তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল মর্গে আছে।
রোববার রাতের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতার বর্ণনা দেন শামা রহমানের স্বজনরা।
তারা জানান, আগুন লাগার পর শামা তার ৩ সন্তান এবং শাশুড়িকে লিফট করে নিচে নামিয়ে দেন। এরপরে ওই লিফট আবার ১২ তলায় উঠলে তিনি নিজে লিফটে করে নামার চেষ্টা করেন। এ সময় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়ায় সপ্তম তলায় গিয়ে তিনি আটকে পড়েন। তখন কৌশলে লিফট থেকে বের হয়ে সাততলার বেলকুনির পাশে গিয়ে দাঁড়ান। সেখানে আগুনের লেলিহান বাড়তে থাকলে সেখান থেকে ভবনের নিচে সুইমিংপুলে লাফিয়ে পড়েন। এদিকে মৃত আনোয়ারে পরিচয় শনাক্ত করেছেন তার ছোট ভাই মো. জুলহাস হোসেন।
এ বিষয়ে ডাক্তার সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের জানান, আহত ওই নারীকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। আজ বোর্ড বসিয়ে তার চিকিৎসার ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গুলশানে বহুতল ভবনে লাগা আগুনের ঘটনায় আরও কয়েকজন আসার সম্ভাবনা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসায় আমরা প্রস্তুত আছি।