ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪ |

EN

তেঁতুলিয়ায় বন বিভাগের গাছ কেটে বিরান ভূমিতে পরিণত করেছে বন বিভাগ

জাবেদুর রহমান জাবেদ, তেতুলিয়া প্রতিনিধি | আপডেট: বুধবার, ফেব্রুয়ারী ৮, ২০২৩

তেঁতুলিয়ায় বন বিভাগের গাছ কেটে বিরান ভূমিতে পরিণত করেছে বন বিভাগ
তেঁতুলিয়া উপজেলার বালাবাড়ি মৌজায় লোহাকাচি এলাকায় বন বিভাগের রোপিত বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক হাজার গাছ বিনা টেন্ডারে কেটে বিরান ভূমিতে পরিনত করেছে তেঁতুলিয়া বন বিভাগ। বন বিভাগ গাছ কাটার জন্য প্রাপ্ত বয়স্ক গাছে নাম্বার লাগিয়ে দিয়ে দরপত্র আহবান করেন। সেমতে নাম্বার বসানো গাছ কাটার অনুমতি পায় সাগর নামে এক কাঠ ব্যবসায়ী। কিন্তু বাগানে অপ্রাপ্ত কয়েক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিনা টেন্ডারে কাটে বাগান উজার করে ফসলের মাঠ বানিয়েছে। তেঁতুলিয়া বন বিট অফিসার শহিদুর রহমানের যোগসাজশে বাগানের পাহারাদার আলাউদ্দিন ও উপকারভোগিদের সভাপতি আলী আহাম্মদ মিলে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তির নিকট গোপনে টাকার বিনিময়ে নদী অংশে পাথর উত্তোলন ও তরমুজ আবাদ করতে লিজ দিয়েছে। সেখানে এখন আলু, বেগুন ও তরমুজের আবাদ করেছে কিছু অসাধু ব্যাক্তি।

এদিকে কয়েকজন উপকারভোগি পরিত্যক্ত মরা খালে ২ একর জমি চাষাবাদের উপযোগি করে দীর্ঘদিন যাবত বাৎসরিক টাকার বিনিময়ে ধান, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলাদি চাষাবাদ করত। বিট অফিসারের নামে তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন সভাপতি আলী আহাম্মদ ও গার্ড আলাউদ্দিন। টাকা দিলে জমিতে আবাদ করতে পারেন আর টাকা না দিলে আবাদ করতে দেয়া হয়না বলে জানান মামলায় অভিযুক্ত উপকারভোগিরা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও তাদের কাছে ১লক্ষ টাকা দাবী করা হয়। দিনমজুর গরীব লোকজন টাকা দিতে না পারায় উপজেলা বন বিট অফিসার শহিদুর রহমান বাদী হয়ে ভুয়া নামে তাদের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় বিজ্ঞ বন আদালতে গাছ কাটার মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
 
লোহাকাচি গ্রামে উপকারভোগি নুরুল আমিন জানান, আমি দীর্ঘ ২৫/২৬ বছর যাবত ডাহুক নদীর জলকরে ৩৩ শতক জমি ভোগদখল করে আসছি। যা বন বিভাগকে বাৎসরিক টাকার বিনিময়ে। এবছর বন বিভাগ আলী আহাম্মদ ও আলাউদ্দিনের মারফত আমার কাছে ১ লক্ষ টাকা চায়। টাকা না দিলে জমি দখল ছাড়তে বাধ্য করে কিছু অসাধু দাঙ্গবাজ লোক দ্বারা। উক্ত জমিতে এখন অবৈধ বিভিন্ন লোক দিয়ে পাথর উত্তোলন করছে। সেগুলো তারা দেখে না যত আইন শুধু গরীব মানুষের উপর। 

উপকারভোগি আফজাল হোসেন জানান, বাগানের সভাপতি আলী আহাম্মদ গত ১৫ বছর বিঘা প্রতি ৫শ টাকা করে নিয়ে জমিতে আবাদ করার সুযোগ দিতো। এবছর একই জমির জন্য ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি গরিব মানুষ অত টাকা দিতে না পারায় আমার নামে বিট অফিসার দ্বারা মিথ্যা মামলা করেছে। 
তরমুজ চাষি কফিরুল ইসলাম বলেন, আমরা কয়েকজন মিলে শুধু তরমুজ আবাদ করার জন্য বিট অফিসারকে ১০ একর জমি নিয়েছি। তরমুজের আবাদ শেষে জমি বন বিভাগকে ছেড়ে দেয়া হবে।

বাগানের গার্ড আলাউদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি ছোট চাকরি করি এসব কোন কিছুই জানিনা আপনি বিট অফিসারকে জিজ্ঞেস করলেই সব পাবেন।

উপকারভোগিদের সভাপতি আলী আহাম্মদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন আমি তো বাগানের কেউ নই। আমার নার্সারি আছে বাগানে আমি গাছের চাঁড়া সরবরাহ করি। টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমি কারো কাছে কোন টাকা পয়সা চাইওনি।

এব্যাপারে উপজেলা বন বিট অফিসার শহিদুর রহমান জানান, অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী ও জমি দখলকারীদে বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বিনা টেন্ডারে অপ্রাপ্ত গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন বাগানে কিছু ঝোপঝাড় ছিল সেগুলো কেটে পরিস্কার করা হয়েছে। তরমুজ লাগানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন কিছু লোক রাতের আধারে অবৈধ ভাবে হালচাষ করে তরমুজ লাগিয়েছে ঠিকই কিন্তু আমরা সেখানে নতুন করে আবার বাগান লাগাবো।