দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সরকারিভাবে বালুমহল ইজারা না থাকলেও এক শ্রেণির বালু খেকোরা অভিনব কৌশলে অবৈধ্যভাবে ছোট যমুনা নদীর বালু লুট করছে। এতে ব্যক্তি বিশেষ আর্থিকভাবে লাভবান হলেও রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
রোববার (৫ ফেব্রæয়ারি) সকালে সরেজমিনে উপজেলার ৭নং শিবনগর ইউনিয়নের বুজরুক শমসের নগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ছোট যমুনা নদী ঘেঁষে রাস্তা পাড়ে বিভিন্ন এলাকায় নদীর বালু তুলে ছোট ছোট ঢিপির মতো করে রাখা হচ্ছে। এ গুলো স্থানীয়ভাবে পাওয়ার টিলারে করে প্রতি টিলার বালু বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা দরে। আর এই কাজ করছেন ওই এলাকার মৃত অহির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল আজিজ ও একই এলাকার জামেদুল ইসলামের ছেলে মধু মিয়া।
স্থানীয় বাসিন্দা হারেস উদ্দিন, আব্দুল মজিদ ও আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে নদীর বালু তুলে নদীর পাড়ে ও রাস্তার পার্শ্বে ঢিবি করে রেখে বিক্রি করছেন আজিজ ও মধু। বাইরের কেউ আসলে তারা নিজের বাসাবাড়ীর কাজের জন্য বালু তুলেছেন বলে চালিয়ে দেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা এই অবৈধ বালু উত্তোলন ও বিক্রি অব্যাহত রেখেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের দেবীপুর, বুজরুক শমসের নগর, দৌলতপুর ইউনিয়নের হরহরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার এক শ্রেণির বালু খেকোরা প্রশাসনের নজর ফাঁকি দিয়ে বালু লুটের অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ওয়াসিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে দুই স্থানের বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম জব্দ করেছে,এর পরেও থামছেনা।
অভিযুক্ত বালু উত্তোলন ও বিক্রিকারী আব্দুল আজিজকে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি গরীব মানুষ, কাজকর্ম নেই। তাই সপ্তাহজুড়ে বালতি দিয়ে নদী থেকে বালু তুলে এক ট্রলি হলে তা বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়েই আমার সংসার চলে। এছাড়া আমার সংসার চালানোর অন্য কোনো পথ নেই।
শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ছামেদুল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে, তারা গ্রাম পুলিশ দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে বলেন। যারা বালু তুলে তারাও ইউনিয়নের ভোটার। তাদের ভোটেই আমরা নির্বাচিত। এ কারণে তাদের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করা আমাদের সম্ভব হয় না।
বিষয়টি নিয়ে কথা বললে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী জানান,বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ওয়াসিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এসি ল্যান্ডকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।