নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম মাস জানুয়ারী শেষ হতে চলল। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী এখনো সব শ্রেণির পাঠ্যবই পায়নি শিক্ষার্থীরা। ফলে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলছেন,সময়মত সব গুলো পাঠ্য বই না পাওয়ায়,শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া পিছিয়ে পড়ছে। এতে করে তারা ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট স‚ত্রে জানা গেছে,ফুলবাড়ী উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে সপ্তম ও ৮ম শ্রেণী এবং প্রাথমিক পর্যায়ে ৩য়,৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীর অর্ধেক বই আসেনি। এ জন্য ছাত্রছাত্রীদের হাতে সব বই তুলে দেয়া সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন কতৃপক্ষ।
উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে এফতেদায়ী ৮টি সহ ২২টি মাদরাসা রয়েছে,এতে শিক্ষার্থী রয়েছে ১২হাজার। প্রথম থেকে ৫ম শ্রেণী প্রর্যন্ত এবং দাখিল ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণী পর্যন্ত চাহিদা অনুযায়ী মাদরাসার ৬২ হাজার ৩শত শিক্ষার্থীকে শতভাগ বই বিতরণ করা হয়েছে। অপরদিকে উপজেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৪০টি,এতে শিক্ষার্থী রয়েছে ৩হাজার ২শ জন। এতে ২লক্ষ ৫৭ হাজার পাঠ্যবই চাহিদা থাকলেও ২লক্ষ ২৫ হাজার বই পেয়েছে। বাকি ৩২ হাজার বই এখোনো পায়নি। তাতে করে ৭ম ও ৮ম শ্রেণীর অর্ধেক বই পাইনি শিক্ষার্থীরা।
অন্য দিকে প্রাথিমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১০৯টি,কেজি স্কুল রয়েছে ৪৯টি এবং শিশু কল্যান বিদ্যালয় রয়েছে ১টি,এনিয়ে সর্বমোট ১৫৯টি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।এতে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ২৯ হাজার ৯৫০জন। প্রাথমিকে পাঠ্য বইয়ের চাহিদা রয়েছে ১লক্ষ ২১হাজার ২০৫টি। এর মধ্যে শিশু শ্রেণীর একটি,১ম শ্রেণীর তিনটি,২য় শ্রেণীর তিনটি,৩য় শ্রেণী,৪র্থ শ্রেণী ও ৫ম শ্রেণীর ৬টি করে মোট ৭৯ হাজার ৮৫০টি পাঠ্য বই পেয়েছে। ৩য়,৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীর বাকি ৬টি করে মোট ৪১ হাজার ৪০০টি বই পায়নি। তাতে করে প্রাথমিকেও তিনটি ক্লাসের অর্ধেক বই পায়নি শিক্ষার্থীরা।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,তাঁরা শিশু শ্রেণী থেকে ২য় শ্রেণি পর্যন্ত শতভাগ বই ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দিতে পেরেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তৃতীয়,চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ১২টি বইয়ের মধ্যে মাত্র ৬টি করে পাঠ্যবই দেয়া সম্ভব হয়েছে। তারা জানান,কতৃপক্ষ বই সরবারহ করলেই বাকি বই গুলো দেয়া সম্ভব হবে। কেউ কেউ সব বই না পেলেও লেখাপড়া অব্যাহত রয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের কোনো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। একই কথা বলেন, মাধ্যমিকের শিক্ষকরাও।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মৎ হাসিনা ভূইয়া আজকের পত্রিকাকে জানান,বই পেতে কিছুটা বিলম্ব হলেও খুব শিঘ্রই সবগুলো বই এসে যাবে। কবে নাগাদ বাকি পাঠ্য বই গুলো আসবে, এমন প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন,কতৃপক্ষ নিদৃষ্ট কোনো সময় জানায়নি তাই তিনি জানেন না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শমসের আলী মন্ডল বলেন,জানুয়ারী মাসের মধ্যে সব গুলো বই দেয়ার কথা ছিল,আজকে ২৯ তারিখ এখোনো পাইনি। তবে দুএক দিনের মধ্য বাকি বই গুলো চলে আসবে।উদ্বোধনের সময় দুইটি করে বই দেয়া হয়েছে,পরে বাকি গুলো পর্যায় ক্রমে আসছে। আমরা চাহিদা দিয়েছি,পাঠ্য বইয়ের নতুন কারিকুলাম সহ দু’একটি পাতায় একটু সমস্যা হয়েছে,সেগুলো নতুন করে প্রিন্ট করছে,সেকারনে একটু দেরি হচ্ছে। এটি সারা দেশের সমস্যা,তবে আমাদের ঐ ধরনের কোনো ঘাড়তি নাই, ধিরে ধিরে পাচ্ছি,সমস্যা হবেনা।