দেশের প্রায় বড় অংশের চালের জোগান মেটায় বোরো মৌসুম। আর এই চাহিদার বড় অংশ আসে দেশের খাদ্য ভান্ডার খ্যাত দিনাজপুর থেকে। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ডিজেলের দাম আর চলতি বছরের শুরুতে বিদ্যুতের দাম বাড়ায় এবার বোরো উৎপাদনে খরচ বাড়বে কৃষকের। বোরো উৎপাদনে বিদ্যুতের দাম বাড়ায় বোরো আবাদে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই। এতে বিপাকে পড়বেন প্রান্তিক চাষিরা।
সেচনির্ভর এই বোরো চাষ মৌসুমের ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে প্রভাব পরেছে কৃষির সব ক্ষেত্রে। চাষাবাদে গুনতে হবে অতিরিক্ত খরচ। বোরো উৎপাদন খরচের একটি বড় অংশ ব্যয় হয় সেচে এই দুশ্চিন্তার মধ্যেই দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষকরা ১৪ হাজার ১২০ হেক্টোর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছেন।
ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের শাল গ্রামের কৃষক মোর্শেদুর রহমান তিনি এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বোরোর জমি তৈরিতে। সেচ খরচ নিয়ে বেশ চিন্তিত তিনি। একইসাথে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও ডিজেলের দাম বাড়ার কারণে এবার খরচ বেশি হবে। কিন্তু খরচ বাড়লেও বাড়বে না বিঘাপ্রতি বোরোর উৎপাদন। তার মতো বর্তমানে বোরো আবাদে ব্যস্ত এ উপজেলার কৃষকরা।
উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত মৌসুমে একর প্রতি জমিতে সেচ খরচ ছিল উচুঁ জমিতে ৩ হাজার ৪শ' টাকা এবং নীচু জমিতে ৩ হাজার ২শ' টাকা। এবার তা হয়েছে উচুঁ জমিতে ৩৭০০ টাকা এবং নীচু জমিতে ৩৫০০ টাকা। একইসাথে এবছর এক একর জমিতে বোরো চাষ করতে সার, কীটনাশক, সেচ, রোপনসহ সর্বমোট খরচ ছিল ১২ হাজার টাকা এবার তা দাঁড়াবে ১৫ হাজার টাকা। এ ক্ষেত্রে যারা বর্গাচাষী নিশ্চিত তারা বোরো চাষ নিয়ে শঙ্কিত।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলক‚প রয়েছে ২৩৪টি। এর মধ্যে বিএডিসি'র ১৭টি, বিএমডিএ এর ১১১টি এবং অন্যান্য বা ব্যক্তি মালিকানার ১০৬টি সবগুলোই বিদ্যুৎচালিত গভীর সেচ পাম্প। আর অগভীর সেচ পাম্প রয়েছে ৩ হাজার ৮৯০টি। এর মধ্যে ডিজেলচালিত অগভীর সেচ পাম্প রয়েছে ৩ হাজার ৪৭০টি আর বিদ্যুৎ চালিত অগভীর সেচ পাম্প হলো ৪২০টি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন ম‚ল্য বৃদ্ধিতে তেমন প্রভাব পড়বে না বোরো চাষে। উপজেলায় আমনের ফলন ভালো হয়েছে। বর্তমানে রবিশষ্যও ভাল হয়েছে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে বোরো ধানের ফলন বাম্পার হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রান্তিক চাষিরা যাতে সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা পান সে বিষয়ে তারা নজরদারি রাখছেন। কৃষকদের সব সমস্যা সমাধানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তাদের পাশে সব সময় থাকবে।