ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল সিন্ডিকেটের কবলে

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | আপডেট: বুধবার, ফেব্রুয়ারী ১, ২০২৩

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল সিন্ডিকেটের কবলে
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের জন্য ঔষধ, যন্ত্রপাতি,আসবাবপত্র,ও লিলেন সামগ্রীর ব্যপক কেনাকাটা হলেও সাধারণ রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত। 

লক্ষ্মীপুর  জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে সদর হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ক্রয় ও মেরামত বাবত ১ কোটি ৫ লক্ষ.৯১ হাজার ১৯১৬ টাকার বিল উত্তোলন করা হয়েছে।

ঔষধ কেনা হয়েছে ৪ কোটি ৪৬ লাখ ৫৯ হাজার ৮৫ টাকার। যার মধ্য ৭৫% সরকারি এসেন্সিয়াল ড্রাগ কোম্পানির ঔষধ। 

যন্ত্রপাতি মেরামত বাবদ উত্তোলন করা হয় ১৭ লক্ষ ৬৫ হাজার ৩০০ টাকা।

প্যাথলজি ক্যমিকেল কেনা হয়েছে ২৬৪৭৯৬৫ টাকার।

গজ ব্যন্ডিজ কেনা হয়েছে ৪৪১৩২৭৮ টাকার।

এছাড়াও অক্সিজেন বাবদ পরিশোধ করা হয় ৪৩৯৬৩২১ টাকা।

এছাড়া ও বিবিধ কেনাকাটায় খরচ করা হয়েছে ৬০৯০৬০০ টাকা।

২০২০-২১ অর্থ বছরেও একই ধরনের কেনাকাটা করা হয়।

এতএত কেনাকাটার পরও সেবার মান নিয়ে সাধারণ রোগীরা ক্ষুব্ধ।

হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বহির্বিভাগের রোগীদের কেবল মাত্র এসেন্সিয়াল ড্রাগ কতৃক সরবরাহ কৃত কিছু ঔষধ দেয়া হয়।

ভর্তিকৃত রোগীদের জন্য ৮০ হাজার আইভি ক্যনোলা ও মাইক্রোপোর ক্রয় করা হলেও রোগীদের বাধ্য করা হয় বাইরের থেকে কিনতে।

এজিথ্রোমাইসিন, মেরোফেনামের মত দামী এন্টিবায়োটিক কেনা হলেও খুব রোগীরাই এসব পেয়ে থাকে।
প্রচুর লিলেন সামগ্রী ক্রয় করা হলেও ভর্তিকৃত রোগীদের ছেঁড়া পাঁটা ও ময়লাযুক্ত পুরনো বিছানা ছাদরই দেয়া হয়।হাসপালের বেডে ময়লা ভরা খোলা ফোমের ছড়াছড়ি। 

অথচ প্রতি বছর বিপুল পরিমান কেনাকাটা করা হলেও রোগীদের বাধ্য করা হয় বাইরের থেকে গজ ব্যান্ডিজ কিনতে।
একইভাবে ২০২০-২১ অর্থ বছরেও ব্যপক কেনাকাটা করা হয়। 

তবে বেশ কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করেন, সব ধরনের কেনাকাটা হয় সিন্ডিকেটের যোগসাজশে।  তারা তাদের মত করে চাহিদাপত্র তৈরী করে, আবার নিজেদের পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে সাজানো শর্ত দিয়ে তৈরী করে দরপত্র। 

নতুন নতুন আসবাবপত্র ও লিলেন সামগ্রী আর ঔষধের ব্যপক কেনাকাটা থাকলেও সাধারণ রোগীদের জন্য পুরনো আসবাবপত্র ও বাইরে থেকেই বেশির ভাগ ঔষধ কেনার অভিযোগ রয়েছে।  

রোগীদের প্রশ্ন তাহলে এগুলো কোথায় যায়? 

হাসপাতালের নোংরা পরিবেশে চিকিৎসা সেবা নিতে না পেরে বাধ্য হয়ে অনেক রোগী ধারদেনা করে প্রাইভেট হাসপাতালে চড়াদামে চিকিৎসা সেবা নিতে বাধ্য হয়।

এক্সরে সামগ্রীর ব্যপক কেনাকাটা থাকলেও এখনো মিলেনা সব ধরনের এক্সরে সেবা।

হাসপাতালের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত বলে জানা গেছে।
চক্রটি এতই শক্তিশালী যে নতুন কোন কর্মকর্তা যোগদান করলেও তাদের সাজানো চকেই হাটতে হয়।
মূলত এরাই পুরো জেলার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে নিয়ে হরিলুটে নেমেছে।

এ বিষয়ে জানতে লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আহমেদ কবিরকে ফোন দিলে তিনি জানান, হাসপাতালে আপাততঃ ঔষধ সংকট রয়েছে, নতুন টেন্ডারে কেনাকাটা করা হলে সংকট কেটে যাবে। ঠিকাদারদের আপত্তির কারনে কিছু শর্ত শীথিল করা হয়েছে। 

হাসপাতালে পর্যাপ্ত আইভি কেনুলা রয়েছে, কোন ওয়ার্ড থেকে কিনতে বাধ্য করলে আমাকে জানাবেন।