দেশের খাদ্য ভান্ডারখ্যাত দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার খাদ্য গুদামে চলতি আমন মৌসুমে ধানের বাজার চড়া হওয়ায় সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে খাদ্য বিভাগ আশাবাদী হলেও নিরাশায় রয়েছেন ধান সংগ্রহ নিয়ে।
উপজেলা খাদ্য বিভাগ সুত্রে জানা গেছে,কৃষকের কাছ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে এক হাজার ৬ মেট্রিক টন ধান এবং ৪২ টাকা কেজি দরে মিলারদের কাছ থেকে দুই হাজার ৭৪৯ দশমিক ১১০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে উপজেলা খাদ্য বিভাগ। গত বছরের ২৯ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে সংগ্রহ অভিযান।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারী পর্যন্ত) ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র এক মেট্রিক টন এবং চাল সংগ্রহ হয়েছে দুই হাজার ৫৫৯ দশমিক ৩৯০ মেট্রিক টন।
খাদ্য বিভাগ জানায়,উপজেলায় ১২টি অটোরাইসমিল,একটি মেজর রাইস মিলসহ ১৪৩টি হাসকিং মিল রয়েছে। সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে মাত্র ৯১টি মিল,এরমধ্যে ১০ টি অটোরাইস মিলসহ ৮১টি হাসকিং মিল। নির্ধারিত সময়ে যারা চুক্তিবদ্ধ হয়নি তাদের তালিকা খাদ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাট বাজার ঘুরে জানাগেছে,বাজারে ধানের দাম চড়া,সরকারি নির্ধারিত ক্রয়মূল্যের চেয়ে প্রতিকেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা বেশি দরে ধান বেচাবিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ধানের দাম বেশী হওয়ায় ধান-চাল সংগ্রহে হোঁচট খাচ্ছে খাদ্য বিভাগ। কৃষক সরকারকে ধান দিচ্ছেন না আর মিল মালিকেরাও চাল দিতে গড়িমসি করছেন বলে জানিয়েছে খাদ্য বিভাগ।
মিল মালিক মঞ্জিল মোরশেদ বলেন,‘হয় সরকারকে নির্ধারিত দাম বাড়াতে হবে, নতুবা বাজারে ধানের দাম কমাতে হবে। বর্তমান বাজারে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে, তা থেকে চাল তৈরি করলে সর্বনিম্ন মূল্য দাঁড়ায় ৪৬-৪৮ টাকা। কিন্তু সরকার নির্ধারণ করেছে ৪২ টাকা। ফলে কেজিতে চার থেকে ছয় টাকা লোকসান গুনে চাল দিতে হবে।
ফুলবাড়ী উপজেলা চাউল কল মালিক সমিতির সভাপতি সামসুল হক মন্ডল ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বাবু বলেন,নিজেদের ক্ষতি করে হলেও সরকারকে সরবরাহ করছেন মিলাররা। ধানের যে দাম,তাতে মিলারদের নাভিশ্বাস উঠেছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মঈন উদ্দিন বলেন,গত বছরের ২৯ নভেম্বর সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক মেট্রিক টন ধান ও এক মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের মাধ্যমে সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু এরপর থেকে এ পর্যন্ত এক কেজি ধানও সংগ্রহ করা যায়নি। তবে চাল সংগ্রহ হয়েছে, দুই হাজার ৩৮৪ দশমিক ১০ মেট্রিক টন। আশা করা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিন করা সম্ভব হবে। তবে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত নিয়ে সংশয় রয়েছে।