ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

হুমকির মুখে কুষ্টিয়ার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: শনিবার, আগস্ট ৭, ২০২১

হুমকির মুখে কুষ্টিয়ার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। জেলার দৌলতপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার ৩ ইউনিয়নের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পদ্মার ভাঙনে কয়েক হাজার একর আবাদী জমি ও বসত বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

হুমকির মুখে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও এলাকার সাধারণ মানুষ। ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এলাকাবাসী।

তবে দৌলতপুরের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহর প্রচেষ্টায় পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে নদী ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে তা নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়ন ও ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের অসংখ্য মানুষের পদ্মা নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি ও কয়েক হাজার একর আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুটি, সরকারী স্থাপনা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 

ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন ফসলি জমি ও বসতবাড়ি পদ্মাগর্ভে চলে যাওয়ায় তারা এখন সর্বশান্ত ও আশ্রয়হীন। ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তাদের।

মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলপাড়া এলাকার কৃষক ফজলুল হক জানান, প্রতিবছরই পদ্মা নদীতে পানি এলে জমি ভেঙে নদীতে তলিয়ে যায়। এবারও এলাকার অসংখ্য মানুষের আবাদী জমি পদ্মার ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এলাকাবাসীর জমি জায়গা ও ঘর-বাড়ি বাঁচাতে পদ্মার ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী উজ্বল হোসেন জানান, মরিচা ইউনিয়নের ভুরকা হাটখোলাপাড়া ও কোলদিয়াড় এলাকায় পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে সংসদ সদস্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। তার চেষ্টায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
 
মরিচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলমগীর জানান, নদী ভাঙনের কবলে তার ইউনিয়ন ব্যাপক হুমকির মুখে আছে। ইতোপূর্বে তার ইউনিয়নের নদীভরাট, চিতলমারী, রুইমারী, চৌদ্দহাজার ও নতুন চরসহ অনেকগুলো গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে হাটখোলাপাড়া, ভুরকাপড়া ও কোলদিয়াড় এলাকা প্রবল নদী ভাঙনে জমি জায়গা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রাইমারি ও হাইস্কুল এবং ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুঁটি হুমকির মুখে রয়েছে।

ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান ছবি জানান, পদ্মার পানি বাড়তে থাকলে বাহাদুরপুর ও জুনিয়াদহ ইউনিয়নের যেখানে বর্ডারস্থল আছে, সেখানে নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটা ঝুঁকির সন্মুখীন হয়। বাঁধটি ভেঙে গেলে ভেড়ামারা উপজেলা পানিতে তলিয়ে যাবে। ব্লকবাঁধ দিয়ে এটার স্থায়ী সমাধানে জন্য বাহাদুরপুর ও জুনিয়াদহ ইউনিয়নবাসীর পক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানান তিনি। 

তিনি আরো জানান, রায়টা, আড়কান্দি, গোসাইপাড়া, মালিপড়া, বাহাদুরপুর এলাকার একটা অংশ পদ্মা নদীর ভাঙনের মুখে আছে। মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলপাড়ার পদ্মার ভাঙন কবলিত এলাকায় কয়েকদিন ধরে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে।
 
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আফসার উদ্দিন জানান, পদ্মার ভাঙনরোধে ১০৬ মিটার এলাকায় ১৩ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এটা আরো সম্প্রসারিত করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।