ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

রংপুরে অনামিকা নামে ভুয়া নারী ম্যাজিস্ট্রেট আটক

সাদনান তাজ আপন,স্টাফ রিপোর্টার | আপডেট: শনিবার, আগস্ট ৭, ২০২১

রংপুরে অনামিকা নামে ভুয়া নারী ম্যাজিস্ট্রেট আটক
রংপুরের কোতওয়ালী থানা এলাকা থেকে অনামিকা তাসনিম সরকর ওরফে অনামিকা নামের এক ভুয়া নারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেটিগেশন (পিবিআই)। বৃহস্পতিবার বিকালে পিবিআইয়ের রংপুরের পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কারা ইন্সট্রাকটর সার্জেন্ট আনজু মিয়া গত ২ আগস্ট বাসা থেকে নিজ মোটরসাইকেলযোগে শহরে এসে আর বাড়ি না ফিরলে পরদিন তার সন্তান ও স্ত্রী রংপুর পিবিআইর অন্যান্য ইউনিটে তার নিখোঁজের বিষয়টি জানান এবং একটি সাধারন ডায়েরি করেন।

গত ৩ আগস্ট পিবিআইর একটি দল ভুক্তভোগী আনজু মিয়াকে রংপুর শহরের ‘সুস্থ জীবন মাদক নিরাময় কেন্দ্র’ থেকে উদ্ধার করে। ভুক্তভোগী আনজু মিয়ার জবানবন্দি থেকে পিবিআই রংপুর চাঞ্চল্যকর তথ্য সংগ্রহ করে।

আনজু মিয়ার বরাত দিয়ে পিবিআই জানায়, গত ছয় থেকে সাত আগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিকা তাসনিম সরকার ওরফে অনামিকার সঙ্গে বিমানে ভ্রমণকালে পরিচয় হয়। এ সময় তারা একে অপরের ব্যক্তিগত ফোন নম্বর বিনিময় করেন। গত ২ আগস্ট সকালে অনামিকা তাকে ফোন করে রংপুর শহরের জেলা স্কুল গেইটে ডেকে পাঠান। তাদের মাঝে মধ্যেই পারস্পরিক ফোনে যোগাযোগ হতো। বর্তমানে তিনি দিনাজপুর কালেক্টরেটে কর্মরত আছেন বলে আনজু মিয়াকে জানান।

পিবিআই জানায়, আনজু মিয়া তার কথা মতো শহরের জেলা স্কুল গেইটে পৌঁছলে অনামিকাকে একটি সাদা নোহা মাইক্রোবাসে বসে থাকতে দেখেন। আনজু মিয়া তাকে স্যালুট করে কুশলাদি জিজ্ঞাসা করেন। একপর্যায়ে দুই থেকে তিনজন অপরিচিত লোক আকষ্মাৎ তাকে ঘিরে ফেলে এবং জোর করে পাশের ‘সুস্থ জীবন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে’ নিয়ে যায়।

পরে তার দেহ তল্লাশি করে নগদ ৪৪ হাজার ২৫০ টাকা, একটি ঘড়ি, একটি স্বর্ণের আংটি, ড্রাইভিং লাইন্সেস কেড়ে নেয়। ঘটনার আকষ্মিকতায় আনজু মিয়া হতবিহ্বল হয়ে ওই ব্যক্তিদেরকে এমন আচরণের কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, আপনাকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিকা তাসনিম সরকার অনামিকার অনুরোধে আপনার মাদকাসক্তের চিকিৎসার স্বার্থে নিরাময় কেন্দ্রে আনা হয়েছে।

পিবিআই বলছে, ওই সময়ে জনৈক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অনামিকা সরকার সঙ্গে মাইক্রোবাসের চালকসহ নিরাময় কেন্দ্রের নিচে অপেক্ষারত ছিলেন। অনামিকা সরকার জব্দকৃত নগদ টাকা ও অন্যান্য সামগ্রী নিরাময় কেন্দ্রের কাছ থেকে নিয়ে পরবর্তীতে অন্যান্য আনুষঙ্গিক চিকিৎসাপত্র, প্রয়োজনীয় কাপড় চোপড়সহ এসে তার ভাইয়ের মোটরসাইকেলটি নিয়ে যাবে বলে জানায়। পরে তিনি সেখান থেকে চলে যান।

আনজু মিয়ার সঙ্গে কথোপকথনের পর বিষয়টি নিয়ে সন্দেহের উদ্রেগ হলে নিরাময় কেন্দ্র থেকে ভুক্তভোগীর ডোপ টেস্ট করা হয়েছে বলে জানায়। পরে আনজু মিয়াকে গত মঙ্গলবার রংপুরের পিবিআই গোপন খবরের ভিত্তিতে রংপুর শহরের ওই নিরাময় কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বুধবার রংপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা করা হয়।

মামলাটি উপপরিদর্শক (এসআই) (নিরস্ত্র) মো. জোবাইদুল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ পিবিআইর একটি চৌকস দল ওই ভুয়া নারী ম্যাজিস্ট্রেট আনিকা তাসনিম সরকার ওরফে অনামিকাকে আটক করে।

রংপুরের পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন জানান যে, একটি সংঘবদ্ধ চক্র দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের অপরাধ করে থাকে। কথিত নারী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতারক অনামিকা সরকার ও অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন ছদ্মবেশে নিত্য নতুন প্রতারণা করে মানুষকে ঠকায়। এদের নামে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। তিনি আরও জানান এ ঘটনায় পুরো চক্রকে তদন্তের আওতায় আনা হবে।