টেকনাফে নয় ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে ১৪ টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ ৪৮৬ রাউন্ড গোলাবারুদ ও মাদকসহ ৬ জন সশস্ত্র ডাকাতকে আটক আটক করেছে কোস্ট গার্ড বাংলাদেশ।
ডাকাতরা সকলে এদেশে বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রিত বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা।
তারা হচ্ছে- উখিয়া উপজেলার থায়ংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের (১৩ নং) হোসেন আহমদের পুত্র মোঃ ইব্রাহিম (২৩), সোলতান আহমেদের পুত্র মোঃ আরিফ (৩৩), নুর হাকিমের পুত্র মোঃ মাহমুদুর রহমান (১৮), টেকনাফ উপজেলার উনছিপ্রাং রোহিঙ্গা ক্যাম্প (নং- ২২) নুরুল ইসলামের পুত্র মোঃ আমিন (৩৩), কাশেমের পুত্র মোঃ কানিজ (২৪), উখিয়া উপজেলার বালুখাখী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের (১৪ নং) সৈয়দ আহমদের পুত্র মোঃ নবী হোসেন (২৮)।
৩রা জানুয়ারি মঙ্গলবার কোস্ট গার্ড বাংলাদেশ এর গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার আবদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান- গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত (২ জানুয়ারি) সোমবার শাহপরী দ্বীপ সংলগ্ন নাফ নদীর মোহনায় একটি সক্রিয় অস্ত্রধারী ডাকাতদল ফিশিং বোটে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন খবরে দিনগত রাত ১ টারদিকে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদল তাদের বোট নিয়ে নাফ নদীর মোহনা হতে টেকনাফের দিকে দ্রুত সরে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। সেন্টমার্টিন কোস্ট গার্ড ডাকাত দলের পিছু নিয়ে তাদের ধরতে অব্যাহত চেষ্টা চালায় এবং কোস্ট গার্ড স্টেশন টেকনাফকে উক্ত তথ্যটি অবগত করে। স্টেশন টেকনাফ হতে চৌকশ আরেকটি অভিযানিক দল ওই ডাকাতদলের বোটটির পিছু নেয়। এক পর্যায়ে স্পীড বোটটি টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালীর নিকটবর্তী খড়ের দ্বীপে ডাকাত সদস্যদেরকে নামিয়ে দ্রুত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলে যায় এবং ডাকাত সদস্যরা দিকবিদিক ছুটে গিয়ে দ্বীপের বনে লুকিয়ে পড়ে।
পরে কোস্টগার্ড স্টেশন টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের আভিযানিক দল দু'টি দলে বিভক্ত হয়ে দ্বীপটি চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। এসময় কোস্টগার্ড সদস্যরা ডাকাত দলের মূল আস্তানা ঘেরাও করে ৬ জন সশস্ত্র ডাকাত সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়। উক্ত ডাকাত সদস্যদের তথ্যমতে দ্বীপের বনের মধ্যে চিরুনী অভিযান চালিয়ে বিদেশী পিস্তল ২ টি, একনলা বন্দুক ৩টি, এলজি ২ টি, শট গান ১ টি, দেশীয় পিস্তল ৬ টি, পিস্তলের ম্যাগাজিন ৪ টি, তাজা গোলা ৪৫০ রাউন্ড, ফাঁকা গোলা ৩০ রাউন্ড, রামদা ৪টি, ইয়াবা ২০ হাজার পিস, বিদেশী মদ ২১ বোতল, বিয়ার ৫৫১ ক্যান, ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত পোষাক ৭ সেট, হ্যান্ডকাফ ১ টি, ল্যান্ড ফোন- ১ টি, বাটন মোবাইল ৪ টি জব্দ করা হয়। উক্ত দ্বীপটি টেকনাফ হতে দূরবর্তী ও বিচ্ছিন্ন এবং জনশূণ্য হওয়ায় এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবত ডাকাতি, মাদকদ্রব ও মানব পাচারসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছিল বলে কোস্ট গার্ডের কাছে তথ্য ছিল। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে কোস্ট গার্ড স্টেশন টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন যৌথভাবে দীর্ঘ ৬ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমান গোলাবারুদ ও মাদকদ্রব্যসহ ৬ জন ডাকাত সদস্য আটক করতে সক্ষম হয় ।
কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা লে. কমান্ডার আবদুর রহমান আরো জানান- এব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।