ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আরিফ বাপ্পীর বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: সোমবার, জানুয়ারী ২, ২০২৩

হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আরিফ বাপ্পীর বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ
ছাত্রলীগে পদ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নেতা-কর্মীর কাছ থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন আরিফ বাপ্পী।

এ ঘটনায় পদ ও টাকা দুইটাই হারিয়ে ভুক্তভোগীরা পদ বানিজ্যের নানা তথ্য ভাইরাল করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া এমন কিছুই ছবি, ভিডিও এবং তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বাহুবল, মাধবপুর এবং বানিয়াচংয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে পদ প্রদানের আশ্বাসে প্রত্যেক নেতা-কর্মীর কাছ থেকে ১০/১৫ লাখ টাকা করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন আরিফ বাপ্পী।

জেলা সভাপতি আরিফ বাপ্পীকে দেয়া এবি ব্যাংকের চেক



প্রতিবেদকের হাতে আসা এমনই কিছু ছবি/ভিডিও পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, মাধবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে সভাপতি পদে’ পদ প্রদানের আশ্বাসে রেজাউল হক শাওন মিয়া নামে এক যুবকের কাছ থেকে প্রায় ২০/২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন আরিফ বাপ্পী।

টাকাগুলো নিয়েছেন ব্যাংক একাউন্ট ও বিকাশে এবং নগদে। রেজাউল হক শাওন উপজেলার গুনাপাড়া গ্রামের জজ মিয়ার পুত্র। রেজাউল হক শাওনের এবি ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব থেকে গত ১ ডিসেম্বর বিকেলে ৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা উত্তোলণ করেন মোশারফ হোসেন আরিফ বাপ্পী। পরে বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনে বিকাশ ও নগদে আরও ১০/১৫ লাখ টাকা গ্রহন করেন তিনি।

রেজাউল হক শাওনসহ আরও কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা গ্রহনের পর গত ৪ ডিসেম্বর ২৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করে জেলা ছাত্রলীগ। এতেই ঘঠে বিপত্তি। টাকা দিয়েও কাঙ্কিত পদ পায়নি রেজাউল হক শাওন।

এ ঘটনায় বার বার ছাত্রলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন আরিফ বাপ্পীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এক পর্যায়ে হবিগঞ্জ শহরের রাজনগরস্থ তার বাসা ঘেরাও করেন ভুক্তভোগীরা। একইভাবে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েও ঘোষণার একদিনের মাথায়ই বাহুবল উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়।

তথ্য আছে, বিবাহিত, চাকুরীজিবী এবং বিএনপি জামায়াতের কর্মীদের নিয়ে গঠন করা হয়েছিল বাহুবল উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি। ঘুষ আদান-প্রদান দুইটাই সমান অপরাধ বলে ভুক্তভোগী শাওনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে সাংবাদিকের কাছে তার কোন বক্তব্য নেই।

বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান-এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদক ’কে বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ রকম কোন তথ্য প্রমাণ বা অভিযোগ পেলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে’।

অভিযুক্ত মোশারফ হোসেন আরিফ বাপ্পীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কে বা কারা টাকা উত্তোলণ করেছে তা তিনি জানেন না। টাকা-পয়সা সংক্রান্ত কোন সম্পর্ক শাওনের সাথে নেই।

উল্লেখ্য, গেল বছরের ২৮ এপ্রিল মোশারফ হোসেন আরিফ বাপ্পীকে সভাপতি এবং ফাইজুর রহামান রবিনকে সাধারণ সম্পাদক করে এ কমিটির অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য।