সীমান্তের কোলঘেষা উত্তরের জেলা দিনাজপুরের ফুলবাড়ীসহ এর আশপাশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জেকে বসতে শুরু করেছে শীত। সেই সাথে উৎপাদন ও আমদানি বাড়ায় শীতকালীন সবজির দাম কমতে শুরু করেছে।
বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম, অপরির্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম।
ফুলবাড়ী বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহাজামাল জানান, স্থানীয়ভাবে পর্যাপ্ত উৎপাদন ও আমদানি থাকায় বাজারে সবজির দাম কমছে। শীতকালীন সময়ে বাজারে নানা রকম সবজি উঠে, প্রথমদিকে দাম একটু বেশি থাকে,পরে সব ধরনের সবজির আমদানি বেশি হওয়ার ফলে সবজির দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই থাকে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে,গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন সবজির দাম প্রতি কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। কোনো কোনো সবজির দাম অধেকে নেমেছে।
বর্তমানে চলতি শীতকালীন সবজি হিসেবে প্রতি কেজি গুটি লাল আলু ৩০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ২৫টাকা,সাদা পাটনাই ২০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৫টাকা,কাটিনাল ২০ থেকে কমে হয়েছে ১৫টাকা,কাচা মরিচ ৪০ টাকা থেকে ৩০টাকা, গাজর ১শ টাকা থেকে কমে ৪০ টাকা,পাতা পিয়াজ,৬০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৩০ টাকা,দেশি পেয়াজ ৪০টাকা থেকে কমে হয়েছে৩০টাকা, ফুলকপি, ৩০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৫ টাকা, বাঁধা কপি ৪০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১০ টাকা, সীম ৫০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ২০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা থেকে কমেছে হয়েছে ১০ টাকা, লাউ ৩০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ২০ টাকা, করলা ৬০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৪০ টাকা, বেগুন ২০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১০ টাকা, বটবটি ২০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৫ টাকা, পালং শাক ৫ থেকে কমে হয়েছে ২ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৫০ টাকা, শসা ৮০ টাকা থেকে কমে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে গরু এবং খাসির মাংসের দাম,গরুর মাংস প্রতিকেজি ৬৫০টাকা ও খাসির মাংস প্রতিকেজি ৮শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাংস ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর বলেন, এখন সিজিন টাইম তবুও বেচা -কেনা কম ,বাজারে সবকিছুর দাম বেশি তাই অন্য খরচ মিটিয়ে সাধারণ মানুষ মাংস খুব একটা কিনছেন না, এতে চাহিদা কম, তাই আগের দামেই রয়েছে।
এদিকে মাছ ব্যবসায়ী রুহুল আমিন বলেন,শীত বাড়ার সাথে সাথে মাছের আমদানী কম হওয়ায় মাছের বাজার কিছুটা বেড়েছে। প্রকার ভেদে প্রতি কেজি দেশি মাছে ৩০-৫০ টাকা বেড়েছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ ১হাজার টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২শ টাকায়,চোট ইলিশ প্রতিকেজি ৪শ থেকে বেড়ে হয়েছে ৬শ টাকা।
অপরদিকে ডিম ব্যবসায়ী সুমন জানান, ডিমের দাম কমেছে। মুরগির ডিম প্রতি হালী (চারটি) ৪০ টাকা থেকে কমে ৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুরগি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জানান, খাবারের দাম বেশি হওয়ায় দাম বেছে মুরগির। ব্রয়লার প্রতি কেজি ১৩০ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪০টাকা,সোনালী ২২০ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৪০টাকা,দেশি মুরগি ৩৩০ থেকে বেড়ে ৪৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি চাষী আব্দুল করিম বলেন, প্রথম দিকে সবজির দাম বেশি ছিল,তাতে লাভও বেশ ভালো হয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজি উৎপাদন ও আমদানি বেশি হওয়ায় দাম অর্ধেক কমেছে।
এভাবে দাম যদি কমতে থাকে তাহলে লোকসানের হিসাব গুণতে হবে। এদিকে ক্রেতারা বলছেন, কয়েকদিন আগের চেয়ে বর্তমানে কাঁচা তরিতরকারির দাম কিছুটা কম। এতে সস্তি ফিরেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার জানান,সবজি উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কিছুটা কমেছে। তারপরও কৃষক যে পরিমাণ মূল্য পাচ্ছে এতে তাদের লোকসান হওয়ার কথা নয়। তবে যারা আগাম সবজী চাষাবাদ করেছে তারা বেশি লাভবান হয়েছেন।