পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার অন্তর্গত সন্ধ্যা নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে কৌরিখাড়া ফেরিঘাট হঠাৎ ভাঙন দেখা দিয়েছে। আজ সোমবার রাত সাড়ে চারটার দিকে ঘাট এলাকার ভাঙন শুরু হয়। এতে একটি বসতভিটাসহ তিনটি দোকান নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে এবং নদীপারের প্রায় ৫০ মিটার জায়গা নদীতে ভেঙে পড়েছে। ভাঙনের কারণে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে ফেরি। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আরও অন্তত ৩০টি বাড়ি।
ক্ষতিগ্রস্ত সুভাষ কর্মকার বলেন, আমরা পরিবারের সবাই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। রাত সাড়ে চারটার দিকে হঠাৎ চিল্লাচিল্লির আওয়াজ পাই। ঘুম থেকে জেগে দেখি আমাদের বসতভিটাসহ কয়েকটি দোকান নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গত বছর নদীভাঙনে আমাদের আরো একটি বাড়ি ভেঙে গিয়েছিল। শুধুমাত্র ভিটামাটি ছিল, এবার ভিটাও চলে গেল, আমাদের কী উপায় হবে? আমরা কোথায় যাব?
স্থায়ী বাসিন্দা বাবুল শীল বলেন, অনেকবার স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যান এবং উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। আমাদের স্থায়ী ভাবে নদীশাসন করে বালুবর্তী বস্তা ফেলে দেবার আশ্বাস দিয়েছিলেন। যদি বস্তা ফেলাতো তাহলে আমারা বসতভিটা হারাতাম না।
স্থানীয়রা জানান, আমাদের এই ঘাট নেছারাবাদ থেকে পিরোজপুর যাবার অন্যতম সংযোগ ফেরী। আজ নদীপারের অনেক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত পাঁচ বছর ধরে শুনে আসছি নদী শাসন করা হবে, কিন্তু সেই কাজের কোনো অগ্রগতি আমরা দেখছি না। আমাদের পিরোজপুর-১ আসনের মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম এমপি মহোদয় নদীশাসনের কার্যকর কোনো ভূমিকা পালন করছেন না। যখন ভাঙন শুরু হয়, তখন আশ্বাস পাই নদী শাসন করা হবে। প্রায় দুই বছর আগে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী সরজমিনে ঘটনাস্থল দেখে গিয়েছিলেন কিন্তু কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পিরোজপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ তানভীর আহমেদ বলেন, ভাঙনের খবর শুনে আমরা ফেরিঘাটের খোঁজখবর নিয়েছি। ফেরি ওঠা নামার জন্য যে গ্যাং সুইচ ছিল সেটি পড়ে গিয়েছে। গ্যাং সুইচ উঠানোর জন্য বরিশাল থেকে ক্রেন আনা হয়েছে। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি বন্ধ থাকা ফেরিঘাট দ্রুত চালু করতে।