সীতাকুণ্ডে ফজরের নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়া মুসল্লিদের ওপর হামলা চালিয়েছে মাদকাসক্ত এক ইউপি সদস্য। তার নাম জাহেদ সুলতান চৌধুরী প্রকাশ রবিন। তিনি সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের (কদম রসুল) সদস্য ও একই এলাকার আব্দুল হালিম চৌধুরীর ছেলে।
দুই সহযোগীসহ তার হামলায় মো. কামাল উদ্দিন (৬৫), মোসলিম উদ্দিন (৫০) ও আরাফাতুর রহমান (৩৫) নামে তিন মুসল্লি আহত হয়েছেন।
শুক্রবার সকালে উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের মাদামবিবিরহাট জাহানাবাদ (চেয়ারম্যান ঘাটা) ইমাম হুসাইন জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর মুসল্লিরা মাদকাসক্ত ইউপি সদস্য ও তার ২ সহযোগীকে আটক করে একটি কক্ষে আটকে রেখে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে ফোন দেন।
খবর পেয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান মো. ইয়াকুব ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় তার উপস্থিতিতে ইউপি সদস্য জাহেদ সুলতান রবিন তার ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি করবেন না মর্মে মুচলেকা প্রদান করেন। পরে উভয়ের মধ্যস্থতায় ছাড়া পান ইউপি সদস্য রবিন।
হামলায় আহত আরাফাতুর রহমান জানান, শুক্রবার ভোরে ফজরের নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হলে মুসল্লিদের ওপর মাদকাসক্ত ইউপি সদস্য রবিন, নুরুদ্দীন ও নিজাম উদ্দিন মুসল্লিদের ওপর হামলা করে। এ সময় তারা মুসল্লিদের উদ্দেশ করে অশালীন ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে। মুসল্লিরা গালমন্দের প্রতিবাদ জানালে ইউপি সদস্য ও তার দুই সহযোগী মুসল্লি মোসলিম উদ্দিনসহ তাদের দুজনকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে।
এ ঘটনার পর স্থানীয়রা দুই সহযোগীসহ ইউপি সদস্যকে আটক করে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। বিষয়টি নিয়ে আগামী ২৮ ডিসেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বৈঠকের আশ্বাস দিলে তাদের তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে সোনাইছড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রবিন বলেন, মসজিদের পাশেই তার শ্বশুরবাড়ি। দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রীর সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের কারণে তিনি নিজেকে সামলাতে না পেরে অতিরিক্ত নেশা করেছিলেন; যার কারণে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেছে।
সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইয়াকুব ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলেন, তিনি ইউপি চেয়ারম্যানের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে উপস্থিত মুসল্লিদের সামনে রবিন চৌধুরী তার ভুল স্বীকার করে ক্ষমাপ্রার্থনার পাশাপাশি মুচলেকা প্রদান করেন। ঢাকা থেকে চেয়ারম্যান ফিরলে এ বিষয়টি নিয়ে পুনরায় বৈঠক হবে বলে জানান তিনি।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। তবে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, এটা আসলে একটা পারিবারিক বিষয়। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।