দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আবাসন প্রকল্পের রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে ইউপি সদস্যকে মারপিট ও হামলার প্রতিবাদে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতি পালন করছেন ৭নং শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদ সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার সকাল থেকে এই কর্ম বিরতি শুরু করে পরিষদের সব কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন ইউপি সদস্যরা। এতে বন্ধ হয়ে যায় পরিষদের সব ধরনের সেবা কার্যক্রম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ ডিসেম্বর বিকেলে শিবনগর ইউপির দেবীপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটির রাস্তা নির্মাণের সময়, পার্বতীপুর উপজেলার শংকরপুর গ্রামের করিম মন্ডলের ছেলে আক্তারুজ্জামান তার জমিতে মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মান হচ্ছে মর্মে রাস্তা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। এসময় ৭নং শিবনগর ইউপি সদস্য শাহিন সরদার প্রতিবাদ করলে ব্যক্তিগত আক্রশের জেরে মাথায় কোদাল দিয়ে কোপ দেয়। আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। প্রতিবাদে অন্যান্য সদস্যরা কর্মবিরতি করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদের সবকটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করছেন সদস্যরা। সচিব, হিসাব সহকারী, উদ্যোক্তা উপস্থিত থাকলেও কক্ষ বন্ধ থাকায় কোন কাজ করতে পারছেন না তারা। ফলে দূর দূরান্ত থেকে জন্ম-মৃত্যু সনদ ট্রেড লাইসেন্স সহ বিভিন্ন প্রয়োজনিয় কাজে আগত মানুষ সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
ইউপি সচিব প্রদীপ কুমার অধিকারী বলেন, মেম্বাররা কক্ষে তালা দিয়েছেন। তাই কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
ভুক্তভোগী ইউপি সদস্য শাহিন সরদার বলেন, সরকার প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছি। আমার মেয়েও শ্লীলতাহানীর শিকার হয়েছে। আক্তারুজ্জামানের বিচার না হলে জনপ্রতিনিধিরা সরকারের যে কোন প্রকল্পে আস্থা হারাবে।
শিবনগর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান দিলিপ চন্দ্র রায় বলেন, এই হামলার মূল অপরাধী আক্তারুজ্জামান গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত এই কর্ম বিরতি চলতে থাকবে। প্রয়োজনে উপজেলার ৭টি ইউপির ৮৪জন সদস্যকে নিয়ে সকল ইউপিতে কর্মবিরতি পালন করা হবে।
এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আক্তারুজ্জামানকে খুজে না পেয়ে, তার মুঠো ফোন নাম্বারে ০১৭১৪৮৬৪২৪৬ একাধিক বার ফোনকল করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: সামেদুল ইসলাম বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধি সরকারী কাজ রক্ষানাবেক্ষণ আমাদের দায়ীত্ব,এভাবে একজন জনপ্রতিনিধির উপর হামলা খুবই দু:খজনক।
আমি সকল সদস্যদের সাথে একমত,অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জোর দাবী জানাচ্ছী।
এ বিষয়ে নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ওয়াসিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন, উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারগণকে নিয়ে বিকেলে আলোচনায় বসেছেন।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন, জানান দুই পক্ষকে ডাকা হয়েছে,আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।