ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

টুইটারে ভোটাভুটির পর রহস্যময় নীরবতা ইলন মাস্কের

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক | আপডেট: মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২০, ২০২২

টুইটারে ভোটাভুটির পর রহস্যময় নীরবতা ইলন মাস্কের
ইলন মাস্ক ‘চিফ টুইট’-এর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন কি না- এখনও এই প্রশ্নের উত্তর মেলা বাকি। তবে, টুইটার পোলের ফলাফল দেখার পর থেকেই নীরব হয়ে আছেন মার্কিন এই ধনকুবের। প্রশ্ন হলো, তার এই নিরবতার কারণ কি? 

গেল সোমবার, টুইটারে মাস্কের এক পোলের ফলাফলে উঠে আসে, ভোট দেওয়া সাড়ে ৫৭ শতাংশ মানুষই তাকে আর প্ল্যাটফর্মটির প্রধান হিসেবে দেখতে চান না।

মাস্কের ক্রমাগত টুইট করার প্রবণতা ও আগের বিভিন্ন পোলের বিপরীতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে অনেকে ধারণা করছিলেন, তিনি হয়তো এটি নিয়ে কথা বলবেন। তবে, তিনি তা করেননি। এমনকি, সোমবার বেশিরভাগ সময় তিনি সন্দেহজনকভাবে ‘চুপ’ থেকেই কাটিয়েছেন। প্রায় ১৮ ঘন্টা কোনো টুইট করেননি তিনি।

সম্প্রতি সাংবাদিকদের অ্যাকাউন্টে নিষেধাজ্ঞা, প্রতিদ্বন্দ্বী প্ল্যাটফর্মগুলোর লিঙ্ক শেয়ার বন্ধ করার মতো বিতর্কিত নীতিমালা চালু, কোম্পানির অর্ধেক কর্মী ছাঁটাই, তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করা কর্মীদের ছাঁটাই, ষড়যন্ত্রতত্ত্ব ও ঘৃণামূলক বক্তব্য ছড়ানোর অভিযোগে প্ল্যাটফর্মে নিষিদ্ধঘোষিত ব্যক্তিত্বদের ফিরিয়ে আনার মতো বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে টুইটারে তার বিশৃঙ্খল নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা বাড়ার পর এই পদক্ষেপ এল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সিএনএন।

মাস্কের সর্বশেষ ওই ভোটকেও ‘অবৈজ্ঞানিক’ আখ্যা দিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

সোমবার বিকেলে বেশ কয়েকটি টুইট করেন মাস্ক। এর মধ্যে ছিল বিশ্বকাপ চলাকালীন টুইটার ব্যবহারের পরিসংখ্যান এবং তার কোম্পানি টেসলা ও স্পেসএক্স-এর বিভিন্ন পোস্টের ‘রিটুইট’।

মাস্ক ওই পোলের ফলাফল অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার ‘অঙ্গীকার’ দিলেও, তিনি আসলেই টুইটার প্রধানের পদ থেকে সরে আসবেন কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়।

এর আগে তিনি স্বীকার করেছেন, এই ‘বিপজ্জনক’ প্ল্যাটফর্ম চালানোর মতো লোক এখনও মিলছে না।

“টুইটারকে টিকিয়ে রাখতে পারে, এমন চাকরী কেউই আসলে চায় না। এর কোনো উত্তরসূরী নেই।” --রোববার রাতে টুইট করেন মাস্ক।

বেশ কয়েকদিন ধরে সোচ্চার হয়ে ওঠা টেসলার কয়েকজন বিনিয়োগকারী প্রত্যাশা করছেন, কেউ হয়তো মাস্কের সামাজিক প্ল্যাটফর্ম চালানোর দায়িত্ব বুঝে নেবেন।

গত মাসে মাস্ক বলেছেন, টুইটার চালানোর জন্য তিনি অন্য কাউকে খুঁজে বের করবেন ও এতে সময় দেওয়া ‘কমিয়ে’ দেবেন। এই দায়িত্ব পালনের জন্য এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি নাম শোনা গেলেও, গত সপ্তাহে মার্কিন প্রকাশনা সিএনবিসি’র প্রতিবেদনে উঠে আসে, মাস্কের টুইটার অধিগ্রহনের পর টেসলার শেয়ার মূল্য কমেছে ২৮ শতাংশ।

সোমবার মাস্কের টুইটার ঘোর সম্পর্কিত বেশ কিছু খারাপ খবরের ধাক্কা পেয়েছে এই বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি। টেসলার রেটিং কমিয়ে দিয়েছে মার্কিন বিনিয়োগ কোম্পানি ‘ওপেনহাইমার অ্যান্ড কো’।

“আমরা বিশ্বাস করি, প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারকারী ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি টুইটারের আর্থিক হিসাবের সমস্যা নিয়ে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন মাস্ক।” --লিখেছেন ওপেনহাইমার বিশ্লেষক কলিন রাশ।

“টুইটার থেকে বিজ্ঞাপনদাতা ও ব্যবহারকারী চলে যাওয়ায় আমরা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার একটি ‘লুপ’ দেখতে পাচ্ছি।”

রাশ আরও যোগ করেন, গত কয়েক মাস ধরে চিফ টুইট হিসেবে মাস্কের আচরণ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে, যা টেসলা ব্র্যান্ডের গ্রহনযোগ্যতা নষ্ট করতে পারে — বিশেষ করে গ্রাহকদের কাছে।

“অনেকের বিশ্বাস, মুক্ত বাক-স্বাধীনতা ঝুঁকির মধ্যে আছে। এমন পরিবেশে গ্রহণযোগ্য মানদণ্ড বা স্পষ্ট যোগাযোগ ছাড়াই সাংবাদিকদের নিষিদ্ধ করায় মাস্ক/টেসলাকে সমর্থণ জানানো বেশিরভাগ মানুষ, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের জন্য অস্বাভাবিক।” --লিখেছেন তিনি।

চার হাজার চারশ কোটি ডলারে টুইটার কিনে এর দৈনন্দিন কার্যক্রম নিজ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মাস্ক নিজেকে অস্বস্তিকর এক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছেন।য়, ওই পরিস্থিতি থেকে দূরে সরে আসতে তিনি হয়তো টেসলায় ফিরে আসবেন, তার কয়েকজন সমর্থক এমন প্রত্যাশাও করতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সিএনএন।