ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

টিকটকারদের স্মৃতিসৌধে কনটেন্ট তৈরির হিড়িক

উপজেলা প্রতিনিধি | আপডেট: শনিবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০২২

টিকটকারদের স্মৃতিসৌধে কনটেন্ট তৈরির হিড়িক
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। 

আজ শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ৭টার দিকে বীর শহিদদের বেদীতে ফুল দিয়ে এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকাল ৭টায় সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার পরে স্মৃতিসৌধের লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঢল নামে জনতার।

দুপুরের পর জনসাধারণের ভীড় কমতে থাকলে দেখা মেলে একটু ভিন্ন চিত্রের। এক ঝাক টিকটকার যারা লাল-সবুজ পোষাক পরিহিত, কেউ মুখে মানচিত্র আবার কেউ জাতীয় পতাকার আল্পনা একে মোবাইলে চিত্র ধারণ করছে সাথে সংযুক্ত হচ্ছে দেশাত্মবোধক সঙ্গীতের। 

তারেক নামে এক টিকটকরের সাথে কথা বলে জানা যায়, সে উত্তরা থেকে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসেছে বিজয় দিবস উপলক্ষে কন্টেন্ট তৈরি করতে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের দেশের একটা গৌরবের বিষয়। যেহেতু টিকটক একটি আন্তর্জাতিক মানের প্লাটফর্ম তাই এখানে বিজয় দিবসের কনটেন্ট তৈরি করে আপলোড করলে বাংলাদেশের এই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসটিকে গোটা পৃথিবীর মানুষের কাছে তুলে ধরা যাবে। 

সাভারের তুলি নামের এক টিকটকার লাল সবুজ শাড়ি পরে মাথায় জাতীয় পতাকা বেধে দেশাত্মবোধক গানে কনটেন্ট তৈরি করার সময় কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, আমরা টিকটকাররা দেশের এই অর্জনকে সকলের কাছে রিপ্রেজেন্ট করার লক্ষ্যে স্মৃতিসৌধে এসে টিকটক তৈরি করছি। আশা করি আমার ফলোয়াররা এই কনটেন্ট খুব পছন্দ করবে। 

তবে মুদ্রার যেমন এপিঠ আছে, রয়েছে তার ওপিঠও। কিছু কিছু টিকটকারদেকে দেখা যায় লাল-সবুজে সজ্জিত হয়ে অশ্লিল মন্তব্য ও ডায়লগের সাথে কন্টেন্ট তৈরি করতে। যা বিজয়ের গৌরবকে পদদলিত করছে। 

টিকটকারদের সিংহভাগই কিশোরী-কিশোরীদের দখলে। তবে এদের অনেকেরই নেই কোনো নৈতকতার ও মূল্যবোধের শিক্ষা। অনেকেই এই গৌরবজ্জল দিনটিকে নিচে নামিয়ে নিয়প এসেছে। অনেককেই দেখা যায় অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, অনৈতিক কথাবার্তা ব্যবহার করে কনটেন্ট তৈরি করতে। 

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এরকমই অশ্লীল কনটেন্ট তৈরি করতে থাকা টিকটকারের সাথে কথা বলতে গেলে, প্রথমে সে সরাসরি না করে দেয় কোনো মন্তব্য করতে। নাম প্রকাশ করা হবে না বললে সে জানায় টিকটকে একেক সময় একেক রকম ট্রেন্ড চলে। আমি যে কনটেন্টটা তৈরি করছি সেটি এখন টিকটকে বেশ ট্রেন্ডি। আমি বিজয় দিবসের কনটেন্ট তৈরি করার পাশাপাশি আরেকটি ট্রেন্ডি কনটেন্ট করছি যাতে টিকটকে আমার ফ্যান-ফলোয়ার বৃদ্ধি পায়। 

সন্তানকে নিয়ে স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন কামাল সাহেব। তিনি এই বিষয় বলেন, শুধু কিছু ফ্যান ফলোয়ার বৃদ্ধির জন্য দেশের এরকম গৌরবোজ্জ্বল দিনটিকে অশ্লিলতায় পরিপূর্ণ করা কোনো যৌক্তিকতা না থাকলেও এদেরকে অচিরেই নৈতিকতা ও মূল্যবোধের শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে দেশের স্বাধীনতার চেতনাকে সকলের মনে ধারন করার সুযোগ করে দিলেই মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য বেড়ে যাবে আরও কোটি গুণে।