ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

ফুলবাড়ীতে জ্বীনের বাদশা গ্রেপ্তার

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর | আপডেট: রবিবার, ডিসেম্বর ৪, ২০২২

ফুলবাড়ীতে জ্বীনের বাদশা গ্রেপ্তার
দিনাজপুুরের ফুলবাড়ীতে প্রযুক্তি ব্যাবহারের মাধ্যমে আলমগীর কবির (৩৮) নামের কথিত এক জ্বীনের বাদশাকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। গত শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কালীতলা বাজার এলাকা থেকে আলমগীর কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত কথিত জ্বীনের বাদশা আলমগীর কবির গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিরাহীম গ্রামের আবুল ইসলামের ছেলে।

থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৮ নভেম্বর রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ০১৭০৫ ৯১৬৫৪৩ নম্বর মোবাইল থেকে ফুলবাড়ী উপজেলার বেতদীঘি ইউনিয়নের নন্দীগ্রামের বাসিন্দা মোস্তফা কামালের স্ত্রী আমেনা বেগমের ব্যবহৃত ০১৩২৪ ০০৯৭১৯ নম্বরের মোবাইল ফোনে কল আসে। কিন্তু ফোনটি আমেনা বেগমের স্বামী মোস্তফা কামাল ধরেন। এ সময় তাকে নামাজ ও কোরআন শরীপ পড়াসহ নানা ধরনের ধর্মীয় কথাবার্তার এক পর্যায়ে মসজিদে একটি জায়নামাজ দেওয়ার জন্য বলা হয়। এ কথা শুণে ভয়ে আমেনা বেগম ওইদিন সকাল ৮ টা ২০ মিনিটে পার্শ্ববর্তী রুহুল ০১৭৮৮ ২২৮৪৯৪ নম্বরের ফোন থেকে ০১৭০৫ ৯১৬৫৪৩ নম্বরের মোবাইল ফোনে ৫৫০ টাকা বিকাশ করে পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকে পরিবারের স্বামী ও সন্তানদের মৃত্যুসহ বিভিন্নভাবে ক্ষয়ক্ষতির ভয়ভীতি দেখিয়ে চলতি বছরের ৯ নভেম্বর  থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন বিকাশ নম্বরের মাধ্যমে এক লাখ ৬৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কথিত ওই জ্বীনের বাদশা।

পুণরায় ১৪ নভেম্বর স্বর্ণের গহনা বিক্রি করে ১৪ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন আমেনা বেগম। বিষয়টি আমেনা বেগমের ভাই একরামুল হক জানতে পেরে তাকে নিয়ে থানার অফিসার ইনচার্জের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন। এ বিষয়ে প্রথমে ১৫ নভেম্বর জিডি এবং পরে ২০ নভেম্বর অভিযোগ এবং সর্বশেষ ২২ নভেম্বর তারিখে প্রতারণার শিকার আমেনা বেগম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ১২।

মামলার সূত্র ধরে মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে এসআই আরিফসহ একদল পুলিশ গত শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কালীতলা বাজার এলাকা থেকে কথিত জ্বীনের বাদশা আলমগীর কবিরকে গ্রেপ্তার করেছেন।

প্রতারনার শিকার আমেনা বেগম বলেন, ফোনে অদ্ভুত কন্ঠে ধর্মীয় কথাবার্তা বলে স্বামী ও সন্তানদের মৃত্যুর ভয়ভীতি দেখানো হতো। স্বামী ও সন্তানের জীবনের কথা ভেবেই পর্যায়ক্রমে এক লাখ ৬৩ হাজার টাকা দিয়ে ফেলেছি। সর্বশেষ নিজের গহনাটুকুও বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলাম। টাকা নেওয়ার পর থেকে ফোন ধরা বন্ধ করে দেয় প্রতারক। 

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, মামলাটি রেকর্ডের পর থেকে কথিত জ্বীনের বাদশাকে গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা শুরু করা হয়। সর্বশেষ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কালীতলা বাজার এলাকা থেকে কথিত জ্বীনের বাদশা আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, আমেনা বেগমকে তার স্বামী ও সন্তানের মৃত্যুর ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতারকচক্র এক লাখ ৬৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতারক আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর সঙ্গে অন্য আরো কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে খোয়া যাওয়া টাকাও উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।