নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় কোচিং সেন্টারে না পড়ায় শিক্ষার্থীকে ফেল করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এঘটনায় ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বিকালে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ ও ভূক্তভোগীদের সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার বেখৈরহাটি বাজারে নির্মাণ কিন্ডারগার্টেন এন্ড কোচিং সেন্টার নামে একটি কোচিং সেন্টার খুলেছেন স্থানীয় যুবক সোহেল রানা ও ভাদেরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জুয়েল মাস্টার। বাজারের পাশেই রয়েছে শতবর্ষী "বেখৈরহাটি নরেন্দ্র কান্ত উচ্চ বিদ্যালয়"।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোচিং সেন্টারে পড়তে বাধ্য করতে নানান প্রলোভন ও অনৈতিক কাজে আশ্রয় নেন পরিচালকরা। কয়েকদিন আগে সানি নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী ভর্তি করতে গিয়ে ওই কোচিং সেন্টারের পরিচালক সোহেল রানা ও শফিকুল ইসলাম জুয়েল মাস্টারের সাথে বেখৈরহাটি নরেন্দ্র কান্ত উচ্চ বিদ্যালয় কম্পিউটার শিক্ষক উজ্জ্বল মিয়া ও মামুন নামে একজনের কথোপকথনের
একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি ফাঁস হওয়ায় ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। এনিয়ে এলাকায় তুমূল আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
২০১৮ সালে কয়েকজন এসএসসি পরীক্ষার্থী ওই কোচিং সেন্টারে না পাড়ায় বিদ্যালয় কম্পিউটার শিক্ষক উজ্জ্বল মিয়ার সহায়তায় বোর্ড পরীক্ষায় উত্তরপত্রে ওএমআর পরিবর্তন বা বিভিন্ন সমস্যা তৈরী করে ফেল করানো হয়। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে দফায় দফায় দেন-দরবারও চলছে।
ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী আনিসুজ্জামান বলেন, আমি ২০১৮ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম। আমাকে নানান ভাবে চাপ দেয়ার পরেও ওই কোচিং সেন্টার ভর্তি হয়নি। আমাদের বিদ্যালয় উজ্জ্বল স্যারের সহায়তা আমাকে ফেল করানো হয়। যা অডিওতে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এই কোচিং সেন্টারের পরিচালকরা ও উজ্জ্বল স্যারকে দিয়ে আমার মত অনেক মেধাবী ছাত্রের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিয়েছে। আমি তাদের অপকর্মের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
কোচিং সেন্টারের পরিচালক সোহেল রানার সাথে মুটোফোনে কথা হলে অডিও কথোপকথনের কথা স্বীকার করে বলেন, কয়েকদিন আগে সরিষা গ্রামের সোলায়েমান মিয়া ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী সানিকে কোচিং সেন্টারের ভর্তি করাতে গিয়ে বেখৈরহাটি নরেন্দ্র কান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক উজ্জ্বল মিয়ার সাথে মুটোফোনে কথা বলি। ওই কথাগুলো সে রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করছে।
আমাদের পাশাপাশি আইডিয়াল নামে আরো একটি কোচিং সেন্টার রয়েছে যেকারণে ছাত্র ভর্তি করতে গিয়ে ছাত্র/ছাত্রী আমারা নানাভাবে বুঝাই এই আর কি! আসলে ছাত্রদের ফেল করানোর ক্ষেত্রে আমাদের কোন হাত নেই।
ফাঁস হওয়া অডিও এর কথা তাদের স্বীকার করে বেখৈরহাটি নরেন্দ্র কান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক উজ্জ্বল মিয়া জানান, আমি কোচিং সেন্টারের কেউ না। আর বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে আমার কোন দ্বায়িত্বও থাকে না।
এব্যাপারে ইউএনও কাবেরী জালাল জানান, অভিযোগ দিয়ে গেলে হয়তো ডাক ফাইলে আছে। সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।