ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

পিটিয়ে শিক্ষার্থীর দাঁত ফেলে দিলো শিক্ষিকা

আল মামুন, বরিশাল প্রতিনিধি | আপডেট: সোমবার, নভেম্বর ২৮, ২০২২

পিটিয়ে শিক্ষার্থীর দাঁত ফেলে দিলো শিক্ষিকা
বরিশালে এক শিশু শিক্ষার্থীকে স্কেল দিয়ে মেরে দাঁত ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।

নগরীর বাণীমন্দিও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই ঘটনার একদিন পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইলেও নির্যাতনের অভিযোগ স্বীকার করে নানান কথা বলছেন ওই শিক্ষক।

তবে শিক্ষককে সংযত হওয়ার আহবান জানিয়েছেন অভিভবাকরা। সেইসঙ্গে বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিচারও দাবি করেছেন তারা।

এদিকে অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

শিক্ষকের পিটুনির শিকার শিক্ষার্থী মঈনউদ্দিন জানায়, বরিশাল নগরীর পুরতান কয়লাঘাট সংলগ্ন এলাকার বাণীমন্দির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সে।

গত রোববার দুপুরে স্কুলে সহপাঠীদের সঙ্গে দুষ্টুমি করছিল সে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তুহিন কনা স্কেল দিয়ে তার মুখে আঘাত করেন। এতে তার ঠোট ফেটে যায় এবং পড়ে যায় উপরের পাটির একটি দাঁত।

শিক্ষার্থীর বাবা আলাউদ্দিন বলেন, ওই শিক্ষককে শিক্ষার্থীরাসহ অভিভাবকরাও ভয় পান। এর আগেও শিক্ষার্থীদের এভাবে মারধরের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার ভয়ে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। তিনি ছেলেকে নির্যাতনের কঠোর বিচার দাবি করেছেন। 

অভিযোগ অস্বীকার করে বাণীমন্দির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তুহিন কনা জানান, দুষ্টুমি করার কারণে তাকে শাসন করা হয়েছে মাত্র। নির্যাতনের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। আর যে দাঁতটি পড়ে গেছে, সেটি নড়ছিল তাই ঘটনার সময় পড়ে যেতে পারে।

এদিকে পিকু মন্ডল নামে অপর এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, তার সন্তান এই শিক্ষিকার ভয়ে বিদ্যালয়েই যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। 

আর সালাম আক্তার নামে অপর এক অভিভাবক জানান, কয়েকদিন আগে এক মেয়েকে পিটিয়ে জখম করেছিলেন ওই শিক্ষিকা। যার মীমাংসা স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে করা হয়।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শিক্ষকা তুহিন কনার দাবি- আগের ঘটনার সবগুলোই মীমাংসা হয়ে গেছে। তাই এসব বিষয়ে কথা বলতে চাইনা। 

তবে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থী এবং পাশ্ববর্তী বাসিন্দারা জানান, প্রায়ই নানা অজুহাতে তাদের শারীরিক নির্যাতন করেন শিক্ষক তুহিন কনা। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুষমা ঘোষ মোবাইল ফোনে জানান, বিষয়টি নিয়ে মীমাংসা করা হয়েছে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে দাঁত ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনায় মীমাংসা হয় কিনা এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।

বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস বলেন, শিক্ষার্থী নির্যাতন দূরের কথা, তাদের ধমক দেওয়ারও নিয়ম নেই। এ অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।