ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪ |

EN

শীতের অগমনে কদর বেড়েছে লেপ-তোষকের, বেড়েছে কারিগরদের ব্যস্ততা

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর | আপডেট: সোমবার, নভেম্বর ২১, ২০২২

শীতের অগমনে কদর বেড়েছে লেপ-তোষকের, বেড়েছে কারিগরদের ব্যস্ততা
আমাদের এই দেশ ছয় ঋতুর দেশ ,বাংলার রূপ বড়ই বৈচিত্র্যময়,কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এ দুই মাস হেমন্তকাল। হেমন্ত মানেই শীতের পূর্বাভাস,আসছে কদিন বাদেই শীতকাল । এরমাঝেই রাত শেষে ঠাণ্ডা শীত শীত হিমেল বাতাস, আর ভোরে ঘাসের ডগায় জমে থাকা শিশিরবিন্দু জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা ।

দেশের উত্তারাঞ্চলের সীমান্ত ঘেষা জেলা দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় শীতের আগমনীবার্তা আসার সাথে সাথে ধুনানকারীদের তুলা ছাঁটাই ও লেপ তৈরির কাজে বেড়েছে কর্মচাঞ্চল্যতা । দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপ-তোশক কারিগরেরা। শীত যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে লেপ-তোশকের কদর। সেই সঙ্গে বেড়েছে কারিগরদের কদর।

কেউ কেউ পুরনো লেপ ভেঙে নতুন করে বানিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ নতুন তুলা দিয়ে তৈরি করে নিচ্ছে লেপ, তোষক ও বালিশ। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে লেপ-তোশকের দোকানগুলোতে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। তবে বর্তমানের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মতোই বেড়েছে লেপ-তোশক তৈরির খরচ। তাই এ বছর শীতের গরম কাপড় তৈরিতে আগের চেয়েও বেশি খরচ পড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়,পৌর শহরের দোকান গুলোতে লেপ,তোশোক,হরেক রকমের তুলা নিয়ে ব্যবসায়ীরা দোকান সাজিয়ে বিক্রি শুরু করেছেন শীতের গরম কাপড়। গত কয়েক সপ্তাহ থেকেই এই উপজেলায় কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা,এতে শীত অনুভূত হচ্ছে।বিশেষ করে ভোরবেলায় কুয়াশায় ঢেকে যায় সবুজ মাঠ ও গাছপালা। পৌষ ও মাঘ মাসে এ উপজেলায় পুরো শীতকাল।

তাই শীত মোকাবিলায়  মানুষ আগে ভাগেই লেপ-তোশক তৈরী করা শুরু করেছেন। তাই শীতকে সামনে রেখে কারিগরদের এখন যেন দম ফেলানোর সময় নেই।

লেপ তৈরি করতে আসা শাহিনুর ইসলাম জানান, প্রতি বছর প্রচন্ড শীত হয়, তাই আগেভাগেই শীতের জন্য একটি লেপ বানিয়ে নিচ্ছি।
জোহরা বেগম নামের এক গৃহীনি জানান, কিছুদিন আগে তার মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তাই মেয়ের জন্য লেপ, তোষক বানাতে এসেছেন তিনি।
কারিগর সুজন ও রাজু  জানান, আমরা একটি তোশক,লেপ তৈরি করতে  ২শ-৩শ টাকা মজুরি নেই। সময় লাগে ১ থেকে দেড় ঘণ্টা। সব কিছুর দাম বেশি তাই খুব একটা পোষানো যায়না।

পৌর শহরের তুলাপট্টির ব্যবসায়ী মুরাদ হোসেন সহ অন্য ব্যবসায়ীরা জানান, দিনদিন ক্রেতার সংখ্যা  বাড়ছে,যত বেশী শীত পড়বে তত ক্রেতাও বাড়বে। পুরো বছরের চেয়ে শীতের এ তিন মাস বেচাকেনা একটু বেশিই হয়। বাকি সময় কাজের চাপ কম থাকে। তাই ক্রেতাদের কথা ভেবে জিনিসপত্রের গুণগত মান বজায় রেখে বায়না করা কাজের পাশাপাশি রেডিমেড জিনিসও তৈরি করে বিক্রি করছেন তাঁরা।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, লেপ-তোশক বানাতে গার্মেন্টসের ঝুট ও কার্পাস তুলা ব্যবহার করতে হয়। একটি সিঙ্গেল  লেপ বানাতে ৭শ-৮শটাকা, সেমি-ডাবল লেপ ৯শ-হাজার টাকা এবং ডাবল লেপ তৈরিতে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা বিক্রি হয়। এর মধ্যে রয়েছে সুতা, কাপড় ও মজুরি ব্যয়। তবে তোশক বানানোর ক্ষেত্রে দাম বেশি পড়ে। তুলার মান, পরিমাণ, নারিকেলের ছোবড়া ও কাপড়ের ওপর নির্ভর করে একেকটি তোশক তৈরির খরচ। সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধির কারণে এ বছর লেপ-তোশকের নির্মাণ ব্যয় আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে।