রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দলীয় সভাপতির এই পদ থেকে কেন স্থায়ীভাবে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না, তা ১৫ দিনের মধ্যে অবগত করতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা গেছে, সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ৫৩ জন সদস্য গুরুতর বেশকিছু অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে চিঠি দেন। অভিযোগগুলোর মধ্যে ছিল- জেলা পরিষদ নির্বাচন, হারাগাছ পৌরসভা নির্বাচন, বিভিন্ন ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ, দলীয় সভা সমাবেশ ও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করা, কমিটির নিয়মিত সভা আহবান না করাসহ দলীয় নীতি-আদর্শ পরিপন্থি আরও বেশকিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে।
এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে দলের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতাদের পরামর্শে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল কমির রাজু বিশেষ সাধারণ সভার আহবান করেন। সভায় মমতাজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন না। জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইলিয়াস আহমেদের সভাপতিত্বে সভা শুরুর পর উপস্থিত নেতাকর্মীরা মমতাজ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো উত্থাপন করে তার স্থায়ী বহিষ্কার দাবি করেন।
সভার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মূলত রংপুর জেলা আওয়ামী লীগকে পাশ কাটিয়ে মমতাজ উদ্দিন আহমেদ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সফিকের মাধ্যমে মিঠাপুকুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের অনুমতি নেন। ২০ নভেম্বর রোববার এ সম্মেলন অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও জেলা আওয়ামী লীগের ৫৩ সদস্যের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তা স্থগিত করে দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
সভা শেষে জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইলিয়াস আহমেদ সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জেলা আওয়ামী লীগের পদ থেকে তাকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া এবং ১৫ দিনের মধ্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে মমতাজ উদ্দিন আহমেদের অবর্তমানে সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব কে পালন করবেন, সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গেছে। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে সহ-সভাপতিদেরই এ দায়িত্ব পালন করার কথা। শনিবারের সভায় মমতাজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত না থাকায় জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি হিসেবে অ্যাডভোকেট ইলিয়াস আহমেদ সভাপতিত্ব করেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে অব্যাহিতপ্রাপ্ত জেলা সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শনিবারের সভাটি তাকে না জানিয়েই করা হয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করছেন বলে জানান।