নন-ক্যাডার নিয়োগে আগের নিয়ম বহালসহ ছয় দফা দাবি নিয়ে ১৫তম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিসিএস নন-ক্যাডার চাকরিপ্রত্যাশীরা।
দাবি আদায়ে এর আগে দুর্নীতিবিরোধী শপথ পাঠ, আলপনা অঙ্কন, মোমবাতি প্রজ্বলন, রশিতে মুলা ঝোলানো, পিএসসির সামনে পরিষ্কার অভিযান ও সাদা মুখোশ পরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। তবে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির আজ ১৫তম দিন চললেও সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) থেকে দায়িত্বশীল কেউ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। দীর্ঘদিন আন্দোলন চলার পরও পিএসসির এমন উদাসীনতার কড়া জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। একইসঙ্গে দাবি না মানা হলে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে পিএসসি চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করা হতে পারে জানিয়েছেন তারা।
আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় রোববার (২০ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে পিএসসির গেটে মিছিল, কবিতা, গান ও বক্তৃতার মাধ্যমে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আন্দোলনকারী গণমাধ্যমকে জানান, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছি। দিনের পর দিন যৌক্তিক দাবি নিয়ে মাঠে আন্দোলন করছি অথচ তাদের কোনো গুরুত্ব নেই। কাচ ঢাকা গাড়িতে যদি পিএসসি কর্মকর্তারা আমাদের কষ্ট বুঝতে না পারেন তবে আগামীতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
এসময় আন্দোলনকারী চাকরিপ্রত্যাশীরা ‘কালো বিধির কালো হাত ভেঙে দাও-গুঁড়িয়ে দাও’, ‘দুর্নীতির কালো হাত ভেঙে দাও-গুঁড়িয়ে দাও’, ‘লাল ফিতার কালো হাত ভেঙে দাও-গুঁড়িয়ে দাও’, ‘লাল ফিতার দৌরাত্ম্য মানি না মানবো না’ ইত্যাদি স্লোগানে মিছিল করেন।
প্রার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো— যেহেতু বিজ্ঞপ্তিতে ৪০-৪৩তম বিসিএস পর্যন্ত নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি, সেহেতু বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন কর্তৃক বিজ্ঞপ্তির পর ৪০-৪৪তম বিসিএস পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী নন-ক্যাডার পদ বিভাজনের মাধ্যমে পদ সংখ্যা নির্ধারণের এ বেকার বিরুদ্ধ ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী পদ বিভাজনের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেখানে ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডারের পদ ৩৬, ৩৭ ও ৩৮তম বিসিএসকে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তারিখওয়ারী পদ বিভাজনের এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ইতিহাসের দীর্ঘকালীন ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীদের থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রার্থীকে নন-ক্যাডারে সুপারিশ করাতে হবে।
যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পিএসসি ২৯ মার্চ ২০২২ তারিখ পর্যন্ত ৩৪-৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশ করেছে সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বর্তমান বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করতে হবে।
বাংলাদেশের শিক্ষিত ও মেধাবী ছাত্রসমাজকে পিএসসির মূল বক্তব্য আড়াল করে অর্থাৎ যার যা প্রাপ্য তাকে তাই দেওয়া হবে এই ভিত্তিহীন কথা বলে যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে এবং বেকার সৃষ্টির এই অপপ্রয়াস অনতিবিলম্বে বন্ধ করে বেকারবান্ধব নীতি নবায়ন করতে হবে।
বিগত এক যুগে পিএসসি যে স্বপ্ন, নির্ভরযোগ্য ও বেকারবান্ধব প্রতিষ্ঠান ছিল সেই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।