ফুটফুটে নিষ্পাপ ছেলে শিশুটি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মিটিমিটি হাসছে। গত শুক্রবার রাত প্রায় ১১টার দিকে শিশুটি জন্ম নিয়েছে : মধ্যনগর বাজারের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এক পাগলির গর্ভে।
রাতের আঁধারে সন্তানসম্ভবা এক পাগলি মায়ের প্রসববেদনার গগনবিদারী চিৎকার ভারি করে তুলছিল সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বাজারের জনপদ। এমন একটি রাতে নির্জন জায়গা থেকে চিৎকারের শব্দ শুনে বাজারের পাহারাদার মধ্যনগর থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক।
এটা নির্মম জীবন বাস্তবতায় এক ফুটফুটে মানবশিশুর পৃথিবীতে আসার গল্প, যা ফেসবুকে লিখেছেন মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক নামে এক মানবিক পুলিশ কর্মকর্ত । তার ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসের সূত্র ধরেই জানা গেল গল্পের বিষয়বস্তু এখন মধ্যনগর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার মধ্যনগর বাজারের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন পাগলির এক ছেলে সন্তান প্রসব করেছেন।
স্থানীয়দের মতে, প্রায় ৫-৬ মাস ধরে মানসিক অসুস্থ অবস্থায় মধ্যনগর বাজারের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরি করতেন। প্রসববেদনায় ওই পাগলির চিৎকার শুনে বাজারের পাহারাদার মধ্যনগর থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে শব্দকে গন্তব্য করে ছুটে গিয়েছিলেন মহৎ ও মানবতার ফেরীওয়ালা মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক নবজাতকসহ তাকে রাতেই উদ্ধার করে মধ্যনগর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভর্তি করেন। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ আছেন।
মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ও সন্তানকে উদ্ধার করে মধ্যনগর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তারা সুস্থ আছে। এবং মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর কাছে শিশুটির নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ওই শিশুটির ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা অবশ্য উপজেলা সমাজসেবা অধিদফতরে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান খান বলেন, ‘আমি আসলে বুঝতে পারছি না, মানতাকারির কথা ভেবে গর্ববোধ করব, নাকি পাগলিটাকে মা বানিয়ে দেয়া পিশাচটার কথা ভেবে লজ্জিত হব। তার সঙ্গে থাকা ওসি জাহিদু্ল হকসহ অন্য যারা ছিলেন সবার প্রশংসা করেন তিনি।