হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় মাদ্রাসা ছাত্র আকরাম খান (৯) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ মাদ্রাসার তিন ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে এ তথ্য জানায় বানিয়াচং থানা পুলিশ। তারা বলছে, ১১০ টাকা চুরির অভিযোগে অন্য তিন ছাত্র মিলে আকরামকে হত্যা করে।
পরবর্তীতে একটি তালা-চাবির সূত্র ধরে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়। গ্রেফতারকৃত ছাত্ররা হল- বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর গ্রামের মস্তু মিয়ার ছেলে ফখরুল মিয়া (১৬), একই গ্রামের জুলহাস মিয়ার ছেলে ফয়েজ উদ্দীন (১৩) ও মহিবুর রহমানের ছেলে জাহেদ মিয়া (১৫)।শনিবার তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গত ১৬ নভেম্বর মক্রমপুর হাফিজিয়া এতিমখানা মাদ্রাসা সংলগ্ন জলাশয় থেকে আকরামের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে মক্রমপুর গ্রামের মৃত দৌলত খানের ছেলে ও এই মাদ্রাসার ছাত্র।
বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র জানান, গ্রেফতার তিন ছাত্র পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পরে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
গ্রেফতারদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে ওসি জানান, আকরাম খানের নিকট থাকা একটি চাবি দিয়ে মাদ্রাসার বোডিংয়ে থাকা অনেক বাক্সের তালা খোলা যেত। সেজন্য কারও কোন কিছু হারিয়ে গেলে আকরামকে সন্দেহ করা হতো। কিছুদিন আগে ফখরুলের বাক্স থেকে দুই দিনে ১১০ টাকা চুরি হয়। পরে সে আকরামের চাবির কথা জানতে পারে। এ জন্য সেও আকরামকে সন্দেহ করতে থাকে। পরে ফখরুল, ফয়েজ ও জাহেদ মিলে তাকে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে।
গত ১৬ নভেম্বর সকাল ১০টায় আকরাম শৌচাগারে গেলে ওই তিনজন সেখান থেকে কথা বলতে বলতে তাকে মাদ্রাসা সংলগ্ন জলাশয়ের কাছে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে। এতেও মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়ায় পানিতে চুবিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর ফখরুল, ফয়েজ ও জাহেদ মাদ্রাসায় এসে ঘুমিয়ে থাকার ভান করে শুয়ে থাকে। এরপর আকরামকে খুঁজে পাওয়া না গেলে তারা তিনজন খোঁজাখুজির ভান করে জলাশয় থেকে মরদেহটি তুলে আনে।
স্থানীয়রা জানায়, আকরামের বাবা মারা যাওয়ার পর তার মা সৌদি আরব চলে যায়। এরপর থেকে সে এতিমখানার মাদ্রাসায় থাকতো।