দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে দু'মাস ধরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটি শুণ্য রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকলেও নিজ কার্যালয়ে কাজের ব্যস্ততা থাকায় তিনি ভূমি সংক্রান্ত কাজে সময় দিতে পারছেন না। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে দূর-দূড়ান্ত থেকে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষের।
সহকারী কমিশনারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামিমা আক্তার জাহান চলতি বছরের গত ১২ই সেপ্টেম্বর পদোন্নতি পেয়ে চলে যাওয়ার পর থেকে তার পদটি শূণ্য হয়ে যায়। ফলে খারিজ, ভিপি, মিসকেইস সহ ভূমি সম্পর্কিত সব ধরণের কাজ ঝুলে আছে। প্রতিদিন অফিস খোলা হলেও কর্মকর্তা না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করা সম্ভব হচ্ছেনা। এতে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে, অন্যদিকে কর্মচারীদের দিন কাটছে যেনতেন ভাবে।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে ফুলবাড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দূর-দূড়ান্ত থেকে আশা মানুষ খারিজসহ ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের জন্য এসে অফিস চত্বরে ভীড় করছেন। দিনের পর দিন ঘুরছেন তারা। খারিজ ছাড়া জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারছেন না। কবে নতুন এসিল্যান্ড আসবেন তাও জানেন না তারা।এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।
কথা হয় এলুয়ারী ইউনিয়নের শালগ্রাম থেকে নামজারি খারিজের জন্য আশা আবেদা বেগম (৫৫)এর সাথে।
তিনি জানান, দু'মাস আগে খারিজের আবেদন দিয়েছি। বারবার এসে ঘুরে যাচ্ছি। এসিল্যান্ড না থাকায় কাজ হচ্ছে না। নতুন এসিল্যান্ড কবে আসবে কেউ বলতেও পারছেনা। খারিজ ছাড়া জমি বিক্রি করতে পারছিনা।
কাঁটাবাড়ি গ্রামের মিলন মন্ডল (৩৫) জানান, তিন মাস আগে খরিজের আবেদন দিয়ে এখনও ঘুরছেন। তিনি বলেন, অফিসার না থাকায় জনগণের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকষণ করছি সাধারণ মানুষের বিষয়টি অনুধাবন করে তারা যেন দ্রুত নতুন এসিল্যান্ড নিয়োগ দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, এসিল্যান্ড স্যারের পদটি দু'মাস থেকে শূণ্য থাকায় জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে। এ পর্যন্ত খারিজের আবেদন জমা পড়েছে ৫শ'র বেশি। মিসকেইস আবেদন পড়েছে ১২৯টি। এসিল্যান্ড ছাড়া এ কাজগুলো করা সম্ভব না। ইউএনও স্যার ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকলেও ব্যস্ততার কারণে সময় দিতে পারছেননা। প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছে, আমরা যতটা সম্ভব বুঝিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছি।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন,নিজ দপ্তরে কাজের চাপ সামলিয়ে সপ্তাতাহে দুদিন সেখানে বসছি। নতুন এসিল্যান্ড না আশা পর্যন্ত সাময়িক একটু অসুবিধা হচ্ছে। তিনি এলে এই সমস্যা থাকবেনা।নতুন এসিল্যান্ড নিয়োগের বিষয়টি কতৃপক্ষের ব্যাপার,আশা করা যায় শিঘ্রই এসে যাবে।